Q & A

ঈমান কাকে বলে? ঈমানের শর্ত কয়টি ও কী কী?

ঈমান একটি আরবী শব্দ। ঈমান এমন একটি শব্দ যে মুসলিম হিসাবে আমরা সবাই এই শব্দটির সাথে পরিচিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে আমরা শুধু এই শব্দটির সাথে পরিচিত। ঈমান কাকে বলে? ঈমানের শর্ত কয়টি ও কী কী? ইসলামি শরিয়তে ঈমানসম্পর্কে কি বলা হয়েছে তা আমরা অনেকেই কিছুই জানি না।এমনকি আমরা নিজেদেরকে মুসলিম হিসাবে, ঈমানদার হিসাবে দাবী করি কিন্তু মূলত এই ঈমান কাকে বলে, এর দাবী কি এই সব বিষয়ে তেমন কিছুই জানি না। প্রিয় পাঠক আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে ঈমান কাকে বলে? ঈমানের শর্ত কয়টি ও কী কী?সব কিছু খুটিনাটি তুলে ধরব। তাই আর দেরি না করে সম্পূর্ণ লিখাটা মনযোগ দিয়ে পড়ুন।

ঈমান কাকে বলে?

ঈমান অর্থ বিশ্বাস । ইসলামি শরীয়তের পরিভাষায় সব বিষয়গুলো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা ও মেনে চলা বা কাজে প্রকাশ করার নাম ঈমান।

ইমান শব্দটি আমনুন মূল ধাতু থেকে নির্গত। যার অর্থ -বিশ্বাস করা, আস্থা স্থাপন করা,স্রীকৃতি দেওয়া,নির্ভর করা, মেনে নেওয়া ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায়, শরিয়তের যাবতীয় বিধি-বিধান অন্তরে বিশ্বাস করা,মুখে স্বীকার এবং অদনুযায়ী আমল করাকে ইমান বলে।ইমানের পরিচয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (স.)বলেন- ইমান হচ্ছে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, পরকাল এবং ভাগ্যের ভালো -মন্দের(ভালো -মন্দ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকেই হয়) প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।(মুসলিম)

ঈমান একটি আরবী শব্দ। এর সাধারণ অর্থ হলো— বিশ্বাস করা। এছাড়াও আনুগত্য করা, অবনত হওয়া, নির্ভর করা ইত্যাদি অর্থেও ঈমান শব্দটি ব্যবহৃত হয়। ঈমান মূলত ছয়টি বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত, আর সেগুলো হলো- ১. আল্লাহ। ২. ফেরেশতা। ৩. আসমানী কিতাব। ৪. নবী-রাসূল। ৫. শেষ দিবস ও পুনরুত্থান এবং ৬. ভাগ্যের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপণ করা।

ইসলামি শরীয়তের পরিভাষায় ঈমানের অর্থ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইমামদেরর বিভিন্নধর্মী সংজ্ঞা পরিলক্ষিত হয়। সেগুলো হলো- ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেছেন, ‘আন্তরিক বিশ্বাস ও মৌখিক স্বীকৃতিই হলো ঈমান’।

ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেছেন, ‘রাসূল (সা.) এর আনীত সব বিধি-বিধানসহ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাই হচ্ছে ঈমান’।ইমাম শাফেয়ী, মালেক ও আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) এর মতে, অন্তরের বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি এবং আরকানসমূহ (ইসলামের বিধি-বিধান) কাজে পরিণত করার নাম ঈমান।

আপনি পছন্দ করতে পারেন  ঃ দর্শক আয়ন কাকে বলে? উদাহরণ সহ

কালেমার প্রথম অংশ হলো- ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। এ কথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, কোনো উপাস্য নেই। তিনি একক, অদ্বিতীয়। তিনি সব পারেন, সব করেন। সব ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব একমাত্র তারই অধীন। তিনি সব ধরণের দুর্বলতা, ত্রুটি থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত ও পবিত্র। সামান্য থেকে সামান্যতম বিষয়েও সবাই তার মুখাপেক্ষী, কিন্তু তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন- এমন বিশ্বাস লালন করা।

কালেমার দ্বিতীয় অংশ হলো- ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’। হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল। তিনি সর্বশেষ নবী। মানুষের হেদায়েতের জন্য মহান আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ পয়গম্বর। তার পরে আর কোনো নবী অথবা রাসূল আসবেন না- এ কথাও মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা এবং মেনে নেয়া।

সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো ঈমান। ঈমানের বিপরীত কুফর। ঈমান সত্য, কুফর মিথ্যা। ঈমান আলো, কুফর অন্ধকার। এই ঈমান রক্ষার জন্য সর্বাগ্রে জানতে হবে ঈমান কাকে বলে। এবং আরো জানতে হবে কোন বিষয়গুলো ঈমানবিধ্বংসী। কী কী কাজ করলে ঈমান চলে যায়। আর কোন কাজের মাধ্যমে ঈমান থাকে এবং আরো মজবুত হয়।

ঈমানের শর্ত কয়টি ও কী কী?

যার ঈমান আছে তাকে বলা হয় ‘মুমিন’ । মুমিন হওয়ার প্রথম শর্ত হল কালিমা পাঠ করা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ । এক আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা, তার প্রেরিত কিতাব সমুহ, নবী রাসুলগন, ফেরেশতা গন, মৃত্যু, কিয়ামত ও আখিরাত এবং তকদীর এর উপর বিশ্বাস করার নাম ঈমান । ঈমান এর শর্ত তিনটি। যথা,

১. ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর প্রতি বিশ্বাস (আকাইদ) (মনে প্রাণে)

২. মৌখিক স্বীকৃতি

৩. সেই অনুযায়ী আমল করা

আপনি কুরআনের অনেক জায়গায় পড়ে থাকবেন, “মুমিন (বিশ্বাসী)” সেখানে বিশ্বাসীরা শুধু মনে বিশ্বাস রেখেই থামে না তারা তদনুসারে আমল ও করেন।ইসলামী তত্ত্ব অনুসারে, আকাইদ বিশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু ঈমান আমলের সাথে সম্পর্কিত। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

আল্লাহ আপনাকে ও আমাকে জ্ঞান অর্জন করার তৌফিক দিন। আমিন

 

আরও দেখুন  ঃ

Siam Shihab

Hello, I'm Siam Shihab. I write Content about all Trending News and Information. I'm working on this Website since June 2021. You can Visit my Profile page to read all of my content. Thank You so much to know about me.
Back to top button
Close