Tech

বিটকয়েন কি ও কেন? বিটকয়েন উপার্জন ব্যবসা

আমরা অনলাইনে বা বন্ধুবান্ধবের মুখে হইত  বিটকয়েন এর নাম শুনছি । কিন্তু বিটকয়েন  সম্পর্কে তেমন  কোনো ধারনা নেই ।আসলে  বিটকয়েন কি ও কেন? বিটকয়েন উপার্জনের উপায় কি? বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ?  বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে? বিটকয়েন ওয়েবসাইট ও বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম ?  বিটকয়েন এর দাম কেমন ? প্রিয় পাঠক বিটকয়েন  সম্পর্কে যত রকম প্রশ্ন আছে সকল উত্তর এই পোস্ট এর মধ্যে পেয়ে যাবেন । তাই  আর দেরি না করে সম্পূর্ণ পোস্ট টি  মনযোগ সহকারে  পড়ুন।
সাধারণত আমরা টাকা বা অর্থকে কাগজের নোট/ ধাতব কয়েনে দেখে থাকি। কিন্তু বর্তমান সভ্যতায় এই নিয়ম ছাড়িয়ে অনলাইন মুদ্রারও প্রচলন শুরু হয়েছে।
বিটকয়েন, ইথিরিয়াম, রিপল, লাইটকয়েন, মনেরো, ড্যাশ, এনইএম ইত্যাদি হলো অনলাইন ভার্চুয়াল মুদ্রা/ অর্থ বা cryptocurrency। এদের মদ্ধে সবচেয়ে মূল্যবান ও জনপ্রিয় হলো বিটকয়েন।

বিটকয়েন কি ও কেন?

Bitcoin হলো একটি নতুন মাত্রার অনলাইন ভার্চুয়াল মুদ্রা। ২০০৯ সালে Satoshi Nakamoto নামের একজন ছদ্ম নামধারী কিংবা একটি অনলাইন গ্রুপ এটি প্রথম প্রচলন করে। এর কোন ব্যাংক সিস্টেম নেই। এটি আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যবহার হলেও এর কোন ব্যাংকিং প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া নেই যা নিয়ন্ত্রণ করবে অন্য সব মুদ্রার মত। এই  ডিজিটাল ভার্চুয়াল মুদ্রা নেটওয়ার্ক নোড এর মাধ্যমে লেন দেন হয়ে থাকে। আর এটি ক্রিপ্টোগ্রাফির মাধ্যমে ব্যবহার হয়। ব্লাকচেইন নামের একটি ডিস্ট্রিবিউটর মাধ্যম ব্যবহার হয় যেটি এই মুদ্রাকে পাবলিকের মাঝে ছড়িয়ে সংযোগ স্থাপন করে। এটি যে কোন দেশের মুদ্রার সাথে এক্সচেঞ্জ করা যায় কিছু প্রসেস অনুসরণ করে। যদিও আমাদের দেশ একে সাপোর্ট করে না তারপরেও অনেক অনলাইন কেনাকাটায় ব্যবহার করা হয়। বিটকয়েনের একক হলো সাতশি। ১বিটকয়েন = ১০০০০০০০০ সাতশি।

bitcoin

  • 1 MBTC = 1000000 BTC
  • 1 uBTC = 0.000001 BTC
  • 1 mBTC = 0.001 BTC
  • 1 satoshi = 0.00000001 BTC

চলুন এখন দেখে নিই বিটকয়েন সম্পর্কে আমাদের ধারণা ও বাস্তবতা


বিটকয়েন থেকে আয়

আমরা অনেকেই ভাবি বিটকয়েন কিনতে পাওয়া যায় কোন একটি মুদ্রার মত দেখতে আকৃতির ধরনের। কিন্তু বাস্তবে বিটকয়েনের কোন আকৃতি নেই। বেশ কিছু উপায় রয়েছে বিটকয়েন ক্রয়ের। যেকোনো সিরিজ সংখ্যা কিংবা অক্ষরে হয়ে সংরক্ষণ থাকে বিটকয়েন যা পাবলিক ব্লকচেইনের মাধ্যমে ভেরিফাইড করা হয়। সুতরাং এই সিরিজ সংখ্যা অনলাইনে বিটকয়েন ওয়ালেটে রাখতে পারেন। বর্তমান সময়ে বিটকয়েন ক্রয় আরো সহজ হয়ে গিয়েছে। আপনি অবশ্য সরাসরি একটি বিটকয়েন কিনতে পারবেন না। এই জন্য বেশ কিছু প্রসেসের মাধ্যমে যেতে হবে। প্রথম প্রথম এই লেনদেন একটু কষ্টজনক। আপনাকে বিটকয়েন কিনতে সাতশি আকারে কিনতে হবে। কেননা এর মূল্য প্রচুর হওয়ায় আস্তো একটা বিটকয়েন ক্রয় করলে পরে লেনদেনে ভাংগাতে সমস্যা হয়। যাইহোক, আপনাকে বিটকয়েন কিনতে বিভিন্ন অনলাইন এক্সচেঞ্জের সাথে যোগাযোগ করতে হবে কিংবা আপনি অন্য কিছু বিনিয়োগ করেও সংগ্রহ করতে পারেন।

আপনার পছন্দ হতে পারে :

  1. অ্যান্ড্রয়েড ফোন দিয়ে পিসির সমস্ত ফাইল দেখুন পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে
  2. OTG (ওটিজি) ক্যাবলের ১০টি অসাধারণ ব্যবহার এখনই জানুন

Bitcoin Anonymous

আমরা অনেকেই বিশ্বাস করি যে বিটকয়েন কে ট্র্যাক করা যায় না। কথাটা একদমই সঠিক নয়। বিটকয়েন কেও ট্র্যাক করা সম্ভব। আমরা জানি যে বিটকয়েন ব্লকচেইনের মাধ্যমে লেনদেন হয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন কেউ যদি চাই সেই লেনদেনের চেইন চেক করতে চায় তাহলে সে পারবে। আর ব্লকচেইন গুলো সঠিক নিয়মে ভেরিফাই করলেই বুঝা যাবে কে কবে কোথায় কিভাবে কোন বিটকয়েন ওয়ালেট থেকে সেই বিটকয়েন ব্যবহার করেছে। তবে মজার বিষয় হলো বিটকয়েনের লেনদেন উচ্চ সিকিউরিটি কোড দ্বারা হয়ে থাকে তাই সাধারণ মানুষ এই তথ্য বের করতে পারবে না। এই জন্য লাগবে এক্সট্রিম লেভেলের প্রোগ্রামার।


বিটকয়েন কি স্থির?

অনেকেই ভাবে যে বিটকয়েন স্থিতিশীল কারেন্সি। কিন্তু এই ধারণাটাও ভুল। কারন প্রতি ১০ মিনিটে বিটকয়েন মাইনাররা একটি করে ব্লকচেইন উৎপন্ন করছে। আসলে স্থিতিশীল ভাবার মূল কারণ হলো বিটকয়েনের মুদ্রাস্ফীতি নেই বললেই চলে তাই। বর্তমানে বিটকয়েনের মাইনিং প্রক্রিয়া বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে তবে ভালো মানের হার্ডওয়্যার ব্যবহারে এই মাইনিং করা যায়। যাইহোক যেহেতু প্রতি ১০ মিনিটে একটি করে ব্লকচেইন উৎপন্ন হচ্ছে সেহেতু বিটকয়েন স্থির এটা ভাবার কোন মানে নেই। আর তাছাড়া বিট কয়েন এখন বিভিন্ন লেনদেন ও ব্যাংকিং খাতেও বিনিময় হচ্ছে তাই বলা যেতেই পারে এটা একটি চলমান কারেন্সি।

বিটকয়েন মাইনিং করা বর্তমান সময়ে একার পক্ষে সম্ভব কি?

এটা ঠিক যে পূর্বে বিটকয়েন মাইনিং করা বেশ কম পরিশ্রমের ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এখন নতুন নতুন সিরিজ কোড উৎপাদন করা একটু তো কঠিন অবশ্যই। তবে এতোটাও কঠিন নয় যে উৎপাদন করা যাবে না। অনেকেই এই ধারণা রাখে যে বিটকয়েন উৎপাদন করা সম্ভব নয় এই সময়ে তাই বিটকয়েন কিনা ভালো। সত্যি বলতে যারা এমন কথা বলে তারা বিটকয়েন সম্পর্কে খুব কম ধারণা রাখে। কারণ প্রতি ১০ মিনিটে একটা নতুন বিটকয়েন জেনারেট হচ্ছে সেই সাথে ব্লকচেইনের মাধ্যমে ব্যবহার হচ্ছে।

বাস্তব জীবনে বিটকয়েনের প্রভাব

আমরা যদিও জানি যে বিটকয়েন অনেক মূল্যবান। তারপরেও অনেকেই প্রশ্ন রাখতেই পারে যে এটি কতটা মূল্যবান যেখানে কোন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যাংক বা সরকার নেই। আসলে কোন কিছুর মূল্য সরকার বা ব্যাংক এর জন্য হয় না। জনগন যেটাকে মূল্যবান করে তুলবে সেটাই মূল্যবান। যেমন ইউএস ডলার যা ইউএস সরকার ও ব্যাংক হতে স্বীকৃত একটি কারেন্সি। কিন্তু জনগন যদি এটাকে ব্যবহার না করে এবং এর পরিবর্তে অন্য কিছুকে কারেন্সি হিসেবে মেনে নেয় এতে তাহলে সরকার নিরুপায়। একটা কাগজের কি এমন মূল্য হতে পারে। আসলে এই কাগজ কে জনগন মূল্যবান করে তুলেছে।

আবার সোনার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। সোনাও একটু ধাতু অন্য সব ধাতুর মত। কিন্তু এর মূল্য বেশি। আপনি হয়তো এখন বলবেন সোনা উজ্জ্বল চকচকে তাই এর মূল্য বেশি হতেই পারে। আসলে টা নয়। আমরা বিশ্ববাসী এর মূল্য বাড়িয়েছি বলেই এর মূল্য বিশ্বব্যাপী একই। সুতরাং বুঝতেই পারছেন বিটকয়েনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা। নেটিজেনরা একে মূল্যবান করে তুলেছে বলেই এর মূল্য রয়েছে। আর একে আমরা সবাই স্বীকৃতিও দিয়েছি যার ফলে বাস্তব জিবনেও এটা কার্যকরী মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যম।


বিটকয়েন এক মাত্র ডিজিটাল ক্রিপ্টোকারেন্সি কি?

এর উত্তর সরাসরি না হবে। কারণ বিটকয়েন ছাড়াও অনলাইনে আরো প্রচুর জনপ্রিয় ডিজিটাল কারেন্সি রয়েছে। ইথিরিয়াম, রিপল, লাইটকয়েন, মনেরো, ড্যাশ, এনইএম এগুলোও বর্তমানে প্রচলিত জনপ্রিয় ডিজিটাল কারেন্সি। এগুলো যেকোনো অনুমদিত ব্যাংকে ভাঙ্গানো যায় এবং অনলাইনে যেকোনো কেনাকাটা কাজ করা যায়। তবে বিটকয়েন এগুলোর চেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

বিটকয়েন পয়েন্টলেস

অনেকেই বলে বিটকয়েন পয়েন্টলেস। কিন্তু সত্যি বলতে বর্তমান সময়ে ডিজিটাল এই কারেন্সি অন্য সব বাস্তব ফিজিক্যাল কারেন্সির চেয়ে বেশ কাজের। যেমন অনলাইন কেনাকাটা বা অনলাইন আন্তর্জাতিক পেমেন্ট কিংবা মানি ট্রান্সফার। এখন আপনি যদি অনলাইনে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট করতে চান বা ফ্রেন্ডকে বিদেশে টাকা পাঠাতে চান তাহলে আপনাকে ব্যাংক এ জেতে হবে তারপর উভয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট লাগবে অনেক ক্ষেত্রে সেম ব্যাংক এর অ্যাকাউন্ট লাগে। তারপরেও আবার আপনাকে সেই দেশের কারেন্সিতে রুপান্তর করতে হবে আর সাথে VAT ইত্যাদি যোগ হবে। এতো কিছু করার পরেও আপনার এই টাকা ৪/৫ দিন লেগে যাবে সেই দেশে পৌছাতে। কিন্তু আপনি বিটকয়েন দ্বারা খুব সহজেই নিরাপদে লেনদেন , পেমেন্ট , কেনাকাটা সব করতে পারেন জাস্ট দুজনের দুটি বিটকয়েন ওয়ালেট থাকলেই হবে। সুতরাং বর্তমান ডিজিটাল সময়ে বিটকয়েন অবশ্যই একটি আশীর্বাদ।

পাঠক বিটকয়েন সম্পর্কে আজ আপনাদের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারনা পরিষ্কার করলাম যেগুলো আমরা এতদিন অনেকেই ভুল বুঝে এসেছি। বিটকয়েন সম্পর্কে আরো কিছু অজানা তথ্য ও ভুল ধারণার সমাধান দিতে ইচ্ছে থাকলেও পোস্ট বড় হয়ে যাওয়ায় আর দিচ্ছি না। তবে আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই সম্পরকে কিছু জানানোর থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন।

আরও দেখুন :

ফাস্ট চার্জিং কি? ফাস্ট চার্জিং টেকনোলজি নিয়ে বিস্তারিত

এন্ড্রয়েড মোবাইল টিপস | ১১টি অ্যান্ড্রয়েড সেটিংস পরিবর্তন

Siam Shihab

Hello, I'm Siam Shihab. I write Content about all Trending News and Information. I'm working on this Website since June 2021. You can Visit my Profile page to read all of my content. Thank You so much to know about me.
Back to top button
Close