Assignment

বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে কৃষি উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থাদি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব বিশ্লেষণ

সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমরা যারা এইচএসসি ২০২৩ পরীক্ষার্থী আছো তারা নিশ্চয়ই এইচএসসি ২০২৩ ৫ম সপ্তাহের অর্থনীতি ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর খুঁজছো। তোমাদের এই অন্বেষণের কথা মাথায় রেখেই আজকের প্রতিবেদনটি তৈরি করেছি। আজকের আলোচনায় থাকছে- বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে কৃষি উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থাদি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব বিশ্লেষণ।

এইচএসসি ২০২৩ পঞ্চম অর্থনীতি ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট

economics

এইচএসসি ২০২৩ পঞ্চম অর্থনীতি ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট

অ্যাসাইনমেন্ট : বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে কৃষি উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থাদি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব বিশ্লেষণ।

(বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের অন্যান্য অংশের ন্যায় বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ; এর প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে লবনাক্ততা এবং উত্তরাঞ্চলে মরুময়তা বান্ধব উফশী বীজ উদ্ভাবনসহ কৃষির আধুনিকীকরণে পারমানবিক শক্তি, জৈব প্রযুক্তি এবং আইসিটি ব্যবহারের গুরুত্ব বিশ্লেষণ);

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/ পরিধি) :

(ক) কৃষি ও পরিবেশ;

(খ) কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব;

(গ) কৃষি উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থাদি;

(ঘ) কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও গুরুত্ব;

এইচএসসি ২০২৩ পঞ্চম অর্থনীতি ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে কৃষি উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থাদি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব বিশ্লেষণ

(ক) কৃষি ও পরিবেশ

বৈচিত্র্যময় ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ একটি দেশ।তবে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মত বাংলাদেশেও পরিবেশগত উন্নয়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। যেহেতু অর্থনৈতিক কার্যাবলি এখনো কৃষিসহ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল, সেহেতু কৃষিসহ গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরসমূহের জিডিপিতে অবদান টেকসই ও পরিবেশ দ্বারা অধিকাংশ প্রভাবিত হয়। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পরিবেশ পরস্পর অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত হওয়ায়, পরিবেশ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি উন্নয়ন কার্যক্রমের সাথে সমন্বিত করার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। আমাদেরকে পরিবেশ দূষণ বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সমূহ কি কিভাবে এগুলো সংগ্রহ হচ্ছে এর প্রভাব ও প্রতিকার উপায় নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

প্রবাহ চিত্র হতে বোঝা, যায় মানুষ পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী। বনভূমি ধ্বংস, কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন, সিএফসি গ্যাস নির্গমন, পরিবেশের প্রতি হুমকিস্বরূপ প্লাস্টিক ও পলিথিন সামগ্রী ব্যবহার, পানিতে আর্সেনিক বিষের মিশ্রণ, শব্দদূষণ, অপরিকল্পিত নগরায়ন ইত্যাদির ফলে মানুষ নিজেই পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে।এর ফলে বিশ্বব্যাপী সৌর তেজস্ক্রিয়তার দ্বারা উষ্ণতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে।জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণা আন্তর্জাতিক সংস্থা intergovernmental panel on climate change এর মতে, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি।

বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অতিবৃষ্টি, বন্যা, সাইক্লোন, খরাসহ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত 100 বছরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েছে 10 থেকে 25 সেন্টিমিটার। সমুদ্র উপকূল এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রতিকূল প্রভাব গুলোর কারণে বাংলাদেশে নাজুক পরিস্থিতির শিকার।বাংলাদেশ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সারা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম।

(খ) কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব নিচে আলোচনা করা হলোঃ-

১। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিঃ বিশেষজ্ঞদের মতে বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা গত 100 বছরে 10 থেকে 25 সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে এ শতকে বঙ্গোপসাগরের পৃষ্ঠের উচ্চতা প্রায় 1 মিটার বৃদ্ধি পাবে বলে গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশে নিযুক্ত উপকূলীয় এলাকা তলিয়ে যাবে।

২। প্রাকৃতিক দুর্যোগঃ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে প্রায় অতিবৃষ্টি, বন্যা, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, খরা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে আছে এর ফলে কৃষি উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৩। উৎপাদন হ্রাসঃ জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষি উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়ে উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। এরফলে শস্য, প্রাণিজ,বনজ ও মৎস্য সম্পদ প্রভৃতি উপখাত ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

৪। কৃষিভূমি হ্রাসঃ সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যেতে পারে, তখন আবাদযোগ্য কৃষি ভূমি হ্রাস পাবে।

৫। খাবার পানির সংকটঃ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার হার বৃদ্ধি এবং উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ এর ফলে খাবার পানির সংকট সৃষ্টি হবে।

৬। খাদ্য সংকটঃ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে জনবহুল বাংলাদেশের উৎপাদন হ্রাসের ফলে খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করবে।

৭। জীববৈচিত্র্য ধ্বংসঃ পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ইকোসিস্টেম তথা সামগ্রিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে।

৮। উদ্বাস্তু সমস্যাঃ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য সংকট, নদী ভাঙ্গন, রোগের প্রকোপ, সামাজিক অস্থিরতা, কর্মহীনতা প্রভৃতি কারণে উদ্বাস্তু সমস্যা দেখা দিবে।

(গ) কৃষি উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থাদি

পারমাণবিক কৃষি প্রযুক্তিঃ

FAO এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বীকৃত খাদ্য ও কৃষি খাতে যেমন-প্রকৃতি, মাটি, শাকসবজি, বৃক্ষ, প্রাণী, বায়ু এমনকি খাদ্যসামগ্রীতে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ (radio isotopes) ব্যবহারের মাধ্যমে পরিমাণগত গুণগত বা রুপগত পরিবর্তন সাধন কে পারমাণবিক কৃষি প্রযুক্তি বলে। গত তিন দশকে বাংলাদেশে কৃষি খাতে পারমাণবিক কৃষি প্রযুক্তি উন্নত দেশের মতো ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পারমাণবিক কৃষি প্রযুক্তির গুরুত্ব বা উল্লেখযোগ্য ব্যবহারসমূহ হলঃ

১. gamma radiation উদ্ভিদ ও প্রাণীর রোগজীবাণু নিরাময়ে ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রাণী ও রোগের জন্য বিভিন্ন শ্রেণীর নিউক্লিয়ার মেডিসিন রয়েছে।

২. রেডিও আইসোটোপ এর সাহায্যে উন্নত মানের শস্য বীজ সংরক্ষণ করা যায় এবং শস্য বীজের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা যায়। সাধারণত শস্যবীজ এর গুণগত মান একবছর সঠিক থাকলেও রেডিও আইসোটোপ এর সাহায্যে এর স্থায়িত্ব পাঁচ বছর বা দশ বছর অর্থাৎ দীর্ঘস্থায়ী করা যায়।

৩. radiation এর মাধ্যমে শস্য বীজে গুণগতমানের পরিবর্তন করে উৎপাদনও বৃদ্ধি করা যায়। যেমনঃ লবণাক্ততা প্রতিরোধী শস্যবীজ উদ্ভাবন, উফসী বীজ উদ্ভাবনের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে গামা রশ্মি প্রয়োগে উচ্চ প্রোটিনযুক্ত নতুন জাতের ছোলা ফরিদপুর -১,নতুন জাতের পাট এটম- 38 এবং ইরাটম 24 ও বিনাশাইল নামক নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করা হয়েছে।

৪. মাটি ও প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, গুণগতমান প্রত্যাশিত পর্যায়ে নেয়ার জন্য, চাষাবাদের ক্ষেত্রে কোম্পানির ব্যবহারে পরমাণু কৃষি প্রযুক্তির ভূমিকা পালন করে ।

বায়োটেকনোলজি পদ্ধতিঃ

বায়োটেকনোলজি বা জৈব প্রযুক্তি হল এরূপ একটি বিষয় যা কোন ব্যবহারের উদ্দেশ্যে জীব কোষের কোন উপাদান, কাঠামোকে পরিমিত পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি নতুন সৃষ্টিকে নির্দেশ করে। Bios শব্দের অর্থ জীবন এবং Technology শব্দের অর্থ প্রযুক্তি। কোন জীবকে মানবকল্যাণে প্রয়োগের যেকোনো প্রযুক্তিকে বলা হয় বায়োটেকনোলজি বা জৈব প্রযুক্তি।

জৈব প্রযুক্তির গুরুত্বঃ

সম্পদ সীমিত কিন্তু বিপুল জনসংখ্যার ভারে আক্রান্ত দেশ সমূহে প্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম। যেমনঃ

১. বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সমূহের নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত। ঘূর্ণিঝড় বন্যা দুর্ভিক্ষ মহামারী কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন উষ্ণতা বৃদ্ধি প্রভৃতি ফলে উক্ত দেশসমূহের যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়, এ কারনেই সৃষ্টি হয় খাদ্যসঙ্কট। বন্যা, খরা প্রভৃতি প্রতিকূল আবহাওয়া প্রতিরোধী শস্য উৎপাদন, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য জৈব প্রযুক্তির গুরুত্ব রয়েছে।

২. উচ্চ ফলনশীল বীজ উদ্ভাবনে এর গুরুত্ব যথেষ্ট। প্রতিটি চাষের মাধ্যমে 30 – 40 শতাংশ ফলন অধিক বাড়ানো যায়। Hira, Aloron, jagoron, sonar Bangla, ময়না প্রভৃতি উচ্চ ফলনশীল ধানের উদাহরণ।

৩. অণুজীব বিজ্ঞানীরা মানুষের স্বাস্থ্য সেবা, কৃষি-শিল্প পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে, মাছের পোনার কৃত্রিম প্রজননে,অধিক ও দ্রুত উৎপাদনের লক্ষ্যে জিন প্রতিস্থাপনে,পানিকে আর্সেনিকমুক্ত করনে জৈব শক্তি ব্যবহার করছেন।

৪. লবণাক্ত সহিষ্ণু ধান,শীত সহিষ্ণু পাট উদ্ভাবন ও জৈব প্রযুক্তির উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে লবণাক্ত এলাকায় চাষের আওতায় আসবে এবং শীতকালেও পাট উৎপাদন করা যাবে যার ফলে কাগজ শিল্প শহ অন্যান্য শিল্পের কাঁচামালের অভাব দূর হবে।

৫. সোনালী ধান থেকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর উপাদান বাদ দিয়ে B-carotene সমৃদ্ধ ধান উৎপাদনে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

৬.বায়োফুয়েল তৈরিতে জৈবপ্রযুক্তি সহযোগিতা করে।জীবের অবশিষ্টাংশ, বর্জ্য, মলমূত্র বৃক্ষ ও গুল্ম প্রক্রিয়াজাত করণের মাধ্যমে বায়োফুয়েল তৈরি করা যায়। এর ফলে পরিবেশ দূষণ কম হবে বরং উষ্ণতার হ্রাস পাবে। ফুয়েল আমদানি হ্রাসের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বৃদ্ধি পাবে।

ইতোমধ্যে পরমাণু ও বায়োটেকনোলজি পদ্ধতি ব্যবহার করে জিংকসমৃদ্ধ ধান (বিশ্বে প্রথম), লবণাক্ততা সহিষ্ণু এবং স্বল্প সময়ের শস্যের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও মাঠ পর্যায়ের সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

আইসিটিঃ

বাংলাদেশ বিপুল জনসংখ্যার ভারে আক্রান্ত একটি কৃষি প্রধান দেশ হলেও এখনও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিবছরই আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ক্রমাগত কমেই যাচ্ছে।এ প্রেক্ষিতে কৃষি বিভিন্ন উপখাত বা খাতের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কৃষির বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক ভূমিকা পালন করেছে, ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি। তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমানে স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প ও সেবা প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃষিতে –

  • ১. সাধারণ কৃষি সমস্যা সমাধান, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যার সমাধান, ফসলের রোগের আক্রমণ, কীটনাশক প্রয়োগ, পরিবেশবান্ধব কীটনাশক প্রকৃতি সম্বন্ধে ধারণা লাভ।
  • ২. উদ্ভাবনী কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার যেমন- নতুন নতুন কৃষি যন্ত্রপাতি, উন্নত বীজ, সার ও কীটনাশক, সর্বোত্তম টেকসই প্রযুক্তি নির্বাচন প্রভৃতি সম্বন্ধে ধারণা লাভ করা যায়।
  • ৩.উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য কৃষি উপকরণ ব্যবহার বিধি যেমন- সার, কীটনাশকসহ আধুনিক কলাকৌশল এর সঠিক প্রয়োগ জানা যায়।
  • ৪.শস্যের জাত ও কৃষি উপকরণ সংরক্ষণ, নতুন জাত ও উপকরণ উদ্ভাবনের সকল তথ্য উপাত্ত সংরক্ষন ব্যবহারের মাধ্যমেই সম্ভব।
  • ৫.প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস আইসিটি এর সাহায্যে কৃষক লাভ করতে পারে।
  • ৬.মাটির গুনাগুন, রোগবালাই ও তার প্রতিকার সম্পর্কে জানতে এটি সাহায্য করে।
  • ৭.কৃষি বিজ্ঞানী গবেষক প্রভৃতির সাথে শক্তিশালী যোগাযোগ স্থাপিত হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন কৃষি তথ্য সার্ভিস, অনলাইন ফার্টিলাইজার রিকমেন্ডেশন সার্ভিস, গ্রামীণফোনের সিআইসি, বাংলালিংক ফোনের ‘জিজ্ঞাসা ৭৬৭৬’ এর মাধ্যমে কোন ফসলের জন্য, কতটুকু জমিতে, কি কি সার দিতে হবে, জমির উর্বরতা মানের ভিত্তিতে সুষম সার ব্যবহারের সুপারিশ পাওয়া যাবে।

(ঘ) কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও গুরুত্ব

বাংলাদেশ একটি জনবহুল কৃষিপ্রধান দেশ। এখনো ২৩.৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। জাতীয়ভাবে ৩৫.৪শতাংশ মানুষ এখনো ভূমিহীন, গ্রামে এই হার ৪৭.৫ শতাংশ। জনসংখ্যা ৪৫.১ শতাংশ মানুষের মাথাপিছু জমির পরিমাণ ০.০৫ একর অপেক্ষা কম। Human Development Report 2015 অনুযায়ী বিশ্বের 187 টি দেশের মধ্যে মানব উন্নয়নে বাংলাদেশের অবস্থান 139 তম- 2014 সালে ছিল 142 তম। এসব তথ্য প্রমাণ করে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমনঃ-

১। নতুন জাতের শস্যবীজ উদ্ভাবনঃ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় লবণাক্ততা ও খরা প্রবণ এলাকার জন্য অথবা বন্যা প্রবণ এলাকার জন্য বিদ্যমান কৃষি যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ শস্যের নতুন জাত উদ্ভাবন জরুরী। এক্ষেত্রে BJRT এর ৫১তম উচ্চ ফলনশীল ‘তোষা পাট ৮’ এবং ব্রি উদ্ভাবিত বিটাক্যারটিন সমৃদ্ধ ‘ গোল্ডেন রাইস’ ব্রি ধান -২৯ যা ভিটামিন এ রোগের প্রতিরোধক হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে।

২। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিঃ উন্নত কৃষি উপকরণ যেমন ধান কাটার সময় কাঁচির পরিবর্তে হারভেস্টার ব্যবহার করলে অল্প শ্রমের সাহায্যে অধিক উৎপাদন করা সম্ভব হয়।একইভাবে উন্নত বীজ,সার,কীটনাশক ব্যবহার করলে উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে।

৩। অধিক উৎপাদনঃ কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একই আয়তনের জমিতে পূর্বের তুলনায় অধিক উৎপাদন পাওয়া সম্ভব। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিও হ্রাস পাবে।

৪। দক্ষতা বৃদ্ধিঃ ক্রমাগতভাবে কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে ও জমিতে ব্যবহারের ফলে কৃষকদের কৃষি উৎপাদনের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

৫। কর্মসংস্থানঃ কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও কৃষি জমিতে প্রয়োগের মাধ্যমে বাড়তি শ্রমের প্রয়োজন হয়।এর ফলে বাংলাদেশের মতো শ্রমবহুল দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।

এই ছিল তোমাদের এইচএসসি ২০২৩ ৫ম সপ্তাহের অর্থনীতি ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্টের উত্তরবৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে কৃষি উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থাদি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব বিশ্লেষণ

আরো দেখুন:

Tags

Siam Shihab

Hello, I'm Siam Shihab. I write Content about all Trending News and Information. I'm working on this Website since June 2021. You can Visit my Profile page to read all of my content. Thank You so much to know about me.
Back to top button
Close