Assignment

পৃথিবীর গঠন ও পর্বতের শ্রেণি বিভাগ

দেশের সকল সাধারণ শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২৩ সালের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা ভূগোল নির্বাচন করেছে তাদের জন্য তৃতীয় সপ্তাহের ভূগোল অ্যাসাইনমেন্ট পৃথিবীর গঠন ও পর্বতের শ্রেণিবিভাগ নিয়ে আজকে আমাদের আলোচনা।

এখানে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সপ্তাহের ভূগোল বিষয়ের প্রথম এসাইনমেন্ট পৃথিবীর গঠন ও পর্বতের শ্রেণীবিভাগ অ্যাসাইনমেন্ট উল্লেখিত প্রশ্নসমূহ এর আলোকে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে।

এই আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ২০২৩ সালের মানবিক বিভাগ থেকে অংশগ্রহণকারী এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ভূগোল বিষয়ের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট খুব ভালো ভাবে সম্পন্ন করতে পারবে এবং মূল্যায়নের সর্বোচ্চ মার্ক পাবে।

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ দ্বিতীয় সপ্তাহের ভূগোল ১ম অ্যাসাইনমেন্ট

মানবিক বিভাগ থেকে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য দ্বিতীয় সপ্তাহের ভূগোল বিষয়ের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে পাঠ্য বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় পৃথিবীর গঠন থেকে।

ভূগোল প্রথম এসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা সংকৃত সিলেবাস এর আলোকে পৃথিবীর বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ গঠন ব্যাখ্যা করতে পারবে, পৃথিবীর ভূমিরূপ, অবস্থান ও গঠন কাঠামো বর্ণনা করতে পারবে।

নিচের ছবিতে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ভূগোল বিষয়ের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট এবং অ্যাসাইনমেন্ট লেখার যাবতীয় নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে উল্লেখ করা হলো

Geography-1st-Paper-1-1140x551

 

অ্যাসাইনমেন্টঃ পৃথিবীর গঠন ও পর্বতের শ্রেণি বিভাগ

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):

ক. ভূত্বক ও পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন চিত্রসহ বর্ণনা;

খ. পৃথিবীর বিভিন্ন প্রকার পর্বত, তার অবস্থান, গঠন, কাঠামো চিত্রসহ বর্ণনা;

মূল্যায়ন রুবিক্স বা নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের চারটি প্রশ্নের যথাযথ উত্তর প্রদান করতে হবে:

ক. ভূ-অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্তর বিভাজন;

খ. পর্বতের প্রকারভেদ;

গ. পর্বতের বৈশিষ্ট্য;

ঘ. বিভিন্ন পর্বতের উদাহরণ;

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ দ্বিতীয় সপ্তাহের ভূগোল ১ম অ্যাসাইনমেন্ট  উত্তর

মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টে ভূগোল বিষয়ের নির্ধারিত কাজ মূল্যায়ন রুবিস্কো অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নির্দেশনা সমূহ অনুসরণ করে পর্বতের শ্রেণীবিভাগ ও পৃথিবীর গঠন শীর্ষক অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

এটি অনুসরণ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পৃথিবীর কোন পর্বতের শ্রেণীবিভাগ শীর্ষ অ্যাসাইনমেন্ট ইন খুব ভালো ভাবে সম্পন্ন করতে পারবে এবং মূল্যায়নে ভাল ফলাফল পাবেন।

পৃথিবীর গঠন ও পর্বতের শ্রেণি বিভাগ

নিচে ধারাবাহিকভাবে এসাইনমেন্ট উল্লেখিত মূল্যায়ন নির্দেশনা এবং অ্যাসাইনমেন্ট লেখার সংকেত গুলো অনুসরণ করে ভূগোল প্রথম পত্র প্রথম অ্যাসাইনমেন্টের পৃথিবীর গঠন ও পর্বতের শ্রেণীবিভাগ ব্যাখ্যা করা হলো।

এসাইনমেন্টের সম্পন্ন করতে গিয়ে ভূগোল প্রথম পত্র প্রথম অ্যাসাইনমেন্টের মূল্যায়ন রুবিক্স নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করা হয়েছে যাতে তোমাদের বুঝতে সুবিধা হয়।

ক. ভূত্বক ও পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন চিত্রসহ বর্ণনা;

প্রশ্ন-ক এর উত্তর

পৃথিবীর অভ্যন্তরীন গঠন অনেকটা পেয়াজের মতো বিভিন্ন খোলসাকৃতির স্তরে বিন্যস্ত। এই স্তরগুলোকে তাদের বস্তুধর্ম এবং রাসায়নিক ধর্ম দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা যায়।

পৃথিবীর বাহিরের দিকে রয়েছে সিলিকেট দিয়ে তৈরি কঠিন ভূত্বক বা ক্রাস্ট, তারপর অত্যন্ত আঠালো একটি ভূ-আচ্ছাদন বা ম্যান্টল, একটি বহিঃস্থ মজ্জা বা কোর যেটি ম্যান্টলের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম আঠালো এবং সব শেষে একটি অন্তঃস্থ মজ্জা।

পৃথিবীর অভ্যন্তরীন গঠন বৈজ্ঞানিক ভাবে বোঝার জন্য কোন স্থানের ভূসংস্থান এবং গভীরতা, বহিঃস্থ এবং অন্তঃস্থ শিলাস্তর, আগ্নেয়গিরি এবং অগ্ন্যুৎপাত, মহাকর্ষীয় এবং তরিৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রের পরিমাপ, ভূকম্পন তরঙ্গের বিশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হয়।

পৃথিবীর গঠনকে দু’ভাবে বর্ণনা করা যায়। এক- যান্ত্রিক উপায়ে যেমন, বস্তুবিদ্যা, অথবা দুই- রাসায়ানিক ভাবে। যান্ত্রিক ভাবে দেখলে, পৃথিবীকে অশ্বমন্ডল, আস্থেনোমণ্ডল, মেসোমণ্ডল, বহিঃস্থ মজ্জা এবং অন্তঃস্থ মজ্জা এই ক’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

আর রাসায়নিক ভাবে পৃথিবীকে ভাগ করা হয়েছে ভূত্বক, উপরস্থ ভূ-আচ্ছাদন, নিম্নস্থ ভূ-আচ্ছাদন, বহিঃস্থ মজ্জা এবং অন্তঃস্থ মজ্জা এই ক’টি ভাগে। ভূপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর ভূ-তাত্ত্বিক উপদানগুলোর গভীরতা নিচের তালিকায় দেখানো হয়েছে।

আরও দেখুন : ফরাসি বিপ্লব পরবর্তী ফ্রান্স পুনর্গঠনে নেপােলিয়ন বােনাপার্টের গণমুখী সংস্কার মূল্যায়ন

পৃথিবীর এই ধরনের স্তর বিন্যাস পরোক্ষ ভাবে বিভিন্ন সময়ে ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট ভূ-কম্পন তরঙ্গের প্রতিফলন এবং প্রতিসরণ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। ভূ-মজ্জার কোন একটি অংশে যখন শিয়ার ওয়েভের চেয়ে ভিন্ন গতিবেগের ভূ-কম্পন তরঙ্গ প্রবাহিত হয়, তখন সাধারণত শিয়ার ওয়েভ বা মাধ্যমিক ভূ-তরঙ্গ ভূ-মজ্জার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে না।

আলো যে ভাবে প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাবার সময় বেঁকে যায়, সেভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন স্তরে ভূ-কম্পন তরঙ্গ তার গতিবেগের ভিন্নতার কারণে প্রতিসৃত হয়; এই প্রতিসরণ হয়ে থাকে স্নেলের সূত্র অনুযায়ী। একইভাবে প্রতিফলনের কারণে ভূ-কম্পন তরঙ্গের গতিবেগ অনেক বেশি বেড়ে যায়, ঠিক যেভাবে আয়নায় প্রতিফলিত হয়ে আলো ছড়িয়ে যায় অনেক দিকে।

খ. পৃথিবীর বিভিন্ন প্রকার পর্বত, তার অবস্থান, গঠন, কাঠামো চিত্রসহ বর্ণনা;

প্রশ্ন-খ এর উত্তর

পর্বত বলতে আমরা ভূ-পৃষ্ঠের এমন একটি অবস্থানকে বুঝি যার উচ্চতা অধিক এবং যা খাড়া ঢাল বিশিষ্ট। পর্বত সাধারণতঃ কমপক্ষে ৬০০ মিটার বা ২০০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হয়।

পর্বতের শ্রেনীবিভাগ  – পর্বত গুলিকে তাদের উৎপত্তি, গঠন, উচ্চতা, আকৃতি ও ঢালের তারতম্যের উপর ভিত্তি করে পর্বত গুলিকে চারটি শ্রেনীতে ভাগ করা হয়ে থাকে, যথা –

(ক) ভঙ্গিল পর্বত;

(খ) স্তূপ পর্বত;

(গ) আগ্নেয় পর্বত ও;

(ঘ) ক্ষয়জাত বা বিচ্ছিন্ন পর্বত;

ক. ভঙ্গিল পর্বত:

ভঙ্গিল পর্বত (Fold Mountain): ভঙ্গ বা ভাঁজ (fold) থেকে ভঙ্গিল শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। কোমল পাললিক শিলায় ভাঁজ পড়ে যে সব পর্বত গঠিত হয়েছে তাদের ভঙ্গিল পর্বত বলে। উদাহরণ— এশিয়ার হিমালয় , ইউরােপের আল্পস , উত্তর আমেরিকার রকি , দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ প্রভৃতি।

ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্যঃ

১. প্রধানত পাললিক শিলাস্তর দ্বারা এই পর্বত গঠিত হয়।

২. ভঙ্গিল পর্বতে আগ্নেয়শিলারও প্রাধান্য দেখা যায়।

৩. ভাঁজের ফলে এই পর্বতে ঊধ্বর্ভাজ ও অপােভজ দেখা যায়।

৪. ভঙ্গিল পর্বতে জীবাশ্ম দেখা যায়।

৫. ভঙ্গিল পর্বতগুলি বহু শৃঙ্গবিশিষ্ট ও সূচাল হয়।

৬. ভঙ্গিল এর বিস্তার ও উচ্চতা খুব বেশি।

৭. ভঙ্গিল পর্বতগুলি সাধারণত ভূমিকম্পপ্রবণ।

ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির কারণঃ ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন মতবাদ প্রচলিত আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল— মহীখাত তত্ত্ব ও পাতভূগাঠনিক তত্ত্ব।

মহীখাত তত্ত্ব (Geosyncline Theory):

মহীখাতের অবস্থান: বর্তমানে যে স্থানে বিশালাকার ভঙ্গিল পর্বতগুলি অবস্থান করছে, সেই স্থানে পর্বত সৃষ্টির পূর্বে ছিল এক বিশাল অগভীর সমুদ্র বা মহীখাত (geosyncline) (মহীখাত হল ভূত্বকে অবস্থিত এক দীর্ঘায়িত অবনমিত অঞল)।

মহীখাতের তলদেশের অবনমন : হাজার হাজার বছর ধরে ওইসব মহীখাতে উভয়দিকের স্থলভাগের ক্ষয়প্রাপ্ত পলি সঞ্চিত হলে মহীখাতের তলদেশ ক্রমশ বসে যায়।

পার্শ্ববর্তী ভূখণ্ডের চলন : মহীখাতের তলদেশ ক্রমশ বসে গেলে পার্শ্ববর্তী ভূখণ্ড ক্রমশ মহীখাতের দিকে সরে আসতে থাকে এবং প্রবল চাপের ফলে মহীখাত ক্রমশ সরু ও গভীর হতে থাকে।

অনুভূমিক ভূ – আলােড়ন : অনেক সময় গতিশীল ভূখণ্ডের প্রবল চাপের সঙ্গে সঙ্গে ভূপৃষ্ঠে অনুভূমিকভাবে ভূ – আলােড়ন শুরু হয়। এর প্রভাবে কোথাও প্রবল চাপের ফলে সংকোচন এবং কোথাও প্রবল টানের ফলে প্রসারণের সৃষ্টি হয়। এর ফলে মহীখাতে সঞ্জিত পাললিক শিলাস্তর সঙ্কুচিত হয় ও ভাঁজ যুক্ত হয়ে উপরে উঠে পড়ে। এইভাবে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়।

পাতভূগাঠনিক তত্ত্ব (Plate Tectonic theory):

ভূবিজ্ঞানী উইলসন , ম্যাকেঞ্জি , হােমস , পিচো প্রভৃতির মতে শিলামণ্ডলের নীচের অংশ অনেকগুলি খণ্ড বা পাতে বিভক্ত। ভূ-অভ্যন্তরের উত্তাপ ও পরিচলন স্রোতের জন্য এই পাতগুলি সব সময়ই গতিশীল। ভূবিজ্ঞানীরা মনে করেন, পাতগুলির এই গতিশীলতার ফলে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি দুটি পাতের অনুভূমিক চলনের ফলে উভয়ের মধ্যে প্রবল সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। তার ফলে উভয়ের সংযােগস্থলে মহীখাত বরাবর সঞ্চিত পলিতে প্রচণ্ড চাপ পড়ে এবং সংঘর্ষরেখা বরাবর ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়।

(খ) স্তূপ পর্বত;

স্তূপের আকারে গঠিত পর্তকে স্তূপ পর্বত বলে। প্রসারণ বলের প্রভাবে দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ যখন পার্শ্ববর্তী অংশ থেকে চাপের ফলে হেলানােভাবে ওপরে উঠে যায় তখন উঁচু অংশকে স্তুপ পর্বত বলে।

উদাহরণ : ভারতের পশ্চিমঘাট পর্বত, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট বেসিন অঞ্চল স্তুপ পর্বতের উল্লেখযােগ্য উদাহরণ। ইউরােপের রাইন গ্রম্ভ উপত্যকার পশ্চিমে ভােজ পর্বত উল্লেখযােগ্য উদাহরণ। এবং ব্ল্যাক ফরেস্ট মালভূমি, ভারতের সাতপুরা পর্বত, শিলং মালভূমি প্রভৃতি।

স্তূপ পর্বতের বৈশিষ্ট্য:

১. দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ হেলানােভাবে উথিত হলে ভূপ পর্বতের সৃষ্টি হয়।

২. স্তূপ পর্বতের একদিকের ঢাল খুব খাড়া হয় , অন্যদিক মৃদু ঢালযুক্ত হয়।

৩. স্তূপ পর্বতের উপরিভাগ প্রায় সমতল হয়।

৪. এই পর্বত ভঙ্গিল পর্বতের মতাে বেশিদূর বিস্তৃত হয় না।

স্তূপ পর্বতের সৃষ্টির কারণ:

গিরিজানি আলােড়নের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠ সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে শিলাস্তরের ওপর পীড়নের সৃষ্টি করে। একসময় প্রবল পীড়নের ফলে শিলাস্তর গভীর ও খাড়াভাবে ফেটে গিয়ে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়। পরে মহাভাবক আলােড়নের প্রভাবে শিলাস্তরের ফাটল বরাবর ফাটলের দু-পাশের শিলাস্তরের আপেক্ষিক সরণ ঘটে। এইভাবে চ্যুতির সৃষ্টি হয়। চ্যুতির ফলেই স্তূপ পর্বত ও হস্টের সৃষ্টি হয়। নানাভাবে এই পর্বত সৃষ্টি হতে পারে —

১. দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ খাড়াভাবে উথিত হলে স্তূপ পর্বত গঠিত হয়,

২. দুটি সমান্তরাল চ্যুতির দু – পাশের অংশ বসে গেলে মধ্যবর্তী অংশটি স্তূপ পর্বতরূপে অবস্থান করে,

৩. দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশটি বসে গেলে পাশের দুটি অংশ স্তূপ পর্বতরূপে অবস্থান করে ,

৪. দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ হেলানােভাবে উথিত হয়ে স্তূপ পর্বত গঠন করে।

(গ) আগ্নেয় পর্বত

ভূ-অভ্যন্তরের উত্তপ্ত তরল ম্যাগমা ভূত্বকের কোনাে দুর্বল স্থান বা আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে ক্রমাগত লাভারূপে নির্গত হয়ে ঠান্ডা ও কঠিন হয়ে যে পর্বত গঠন করে তাকে আগ্নেয় পর্বত বলে।

আগ্নেয় পর্বতের বৈশিষ্ট্য:

১. আগ্নেয় ভস্ম, লাভা সিন্ডার, পাইরােক্লাস্ট ধীরে ধীরে সঞ্চিত হয়ে আগ্নেয় পর্বতের সৃষ্টি হয় বলে একে সঞয়জাত পর্বতও বলে।
২. আগ্নেয় পর্বতে একটি মুখ্য এবং অসংখ্য গৌণ জ্বালামুখ থাকে।
৩. পর্বতগুলি শঙ্কু আকৃতির হয়।

উদাহরণ— ভারতের ব্যারেন , জাপানের ফুজিয়ামা, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মৌনালােয়া ইত্যাদি।

আগ্নেয় পর্বতের উৎপত্তি / সৃষ্টির কারণ:

পাতসংস্থান তত্ত্ব : এই তত্ত্ব অনুসারে, দুটি মহাদেশীয় মহাসাগরীয় পাত মুখােমুখি অগ্রসর হলে তাদের মধ্যে প্রবল। সংঘর্ষ ঘটে এবং ভারী নিমজ্জিত পাতটি গলে গিয়ে ম্যাগমা শিলাস্তরের ফাটল পথে ভূপৃষ্ঠে চলে এসে সঞ্চিত হয়ে আগ্নেয় পর্বতের সৃষ্টি করে। উদাহরণ – জাপানের ফুজিয়ামা।

ম্যাডােনাল্ডের মত: বিখ্যাত ভূবিজ্ঞানী ম্যাকডােনাল্ডের মতে, প্রবল। ভূ – আলােড়নের ফলে ভূত্বকে ফাটলের মধ্য দিয়ে ভূগর্ভস্থ উত্তপ্ত ম্যাগমা , কাদা, ছাই, গ্যাস, বাষ্প প্রভৃতি প্রবল বেগে বেরিয়ে। এসে ফাটলের চারপাশে সঞ্চিত হয়ে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি হয়। উদাহরণ ভারতের ব্যারেন।

হটস্পট ধারণা : ভূত্বকের গভীরে তেজস্ক্রিয়তাজনিত উত্তাপ বৃদ্ধির ফলে হটস্পট তৈরি হয়। এখান থেকে তাপের ঊর্ধ্বমুখী পরিচলন স্রোতের মাধ্যমে ম্যাগমার উদগিরণ ঘটে এবং তা কালক্রমে সঞ্চিত হয়ে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি হয়। উদাহরণ হাওয়াই দ্বীপের মৌনালােয়া।অর্থাৎ , দীর্ঘকাল ধরে লাভার সঞ্জয়ের ফলে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি হওয়ায় একে সঞ্চয়জাত পর্বত বলে।

আগ্নেয় পর্বতের শ্রেণীবিভাগ:

আগ্নেয়গিরির প্রকৃতি ও অগ্ন্যুৎপাতের সময়কালের ব্যাপ্তি অনুসারে আগ্নেয়গিরিকে প্রধানত তিনভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল—

জীবন্ত / সক্রিয় আগ্নেয়গিরি (Active Volcano), সুপ্ত আগ্নেয়গিরি (Dormant Volcano), মৃত আগ্নেয়গিরি ( Extinct Volcano)

(ঘ) ক্ষয়জাত বা বিচ্ছিন্ন পর্বত

অবশিষ্ট বা ক্ষয়জাত পর্বতঃ বহু বছর ধরে সূর্যকিরণ বৃষ্টিপাত প্রবাহমান জলধারা হিমবাহ ও বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা পর্বত মালভূমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যে অবশিষ্ট উচ্চভূমিতে পরিণত হয়, তাকে অবশিষ্ট বা ক্ষয়জাত পর্বত বলে।

যেমন ভারতের রাজস্থানের আরাবল্লী, পশ্চিমবঙ্গের শুশুনিয়া ও অযোধ্যা, উত্তর আমেরিকার হেনরি ও অ্যাপেলেশিয়ান প্রভৃতি।

ক্ষয়জাত পর্বতের সৃষ্টি প্রক্রিয়াঃ

ক্ষয়জাত ও বাবা অবশিষ্ট পর্বতের সৃষ্টি প্রক্রিয়া খুবই ধীর গতিসম্পন্ন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি যেমন বৃষ্টিপাত, প্রখর রৌদ্র কিরণ, নদী, হিমবাহ, বায়ু প্রবাহ দ্বারা শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে। এই ক্ষয় প্রক্রিয়ায় কঠিন শিলা অপেক্ষা নরম কোমল শিলা দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে প্রায় সমপ্রায় ভূমিতে পরিণত হয় এবং ক্ষয় প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি বলে কঠিন শিলা অবশিষ্টাংশ রূপে থেকে যায়। এই অবশিষ্ট উচ্চভূমির উচ্চতা বেশি হয় বলে তাকে ক্ষয়জাত ও বা অবশিষ্ট পর্বত বলে।

বন্ধুরা এই ছিল তোমাদের জন্য ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ভূগোল বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট এর নমুনা উত্তর। আশা করছি এটি অনুসরণ করার মাধ্যমে তোমরা ২০২৩ সালের ভূগোল বিষয়ের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তরটি খুব সুন্দর ভাবে লিখতে পারবে এবং ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবে।

আরও দেখুন :

 

Tags

Siam Shihab

Hello, I'm Siam Shihab. I write Content about all Trending News and Information. I'm working on this Website since June 2021. You can Visit my Profile page to read all of my content. Thank You so much to know about me.
Back to top button
Close