Tech

মোবাইল ফোন কি আসলে ক্যান্সারের অন্যতম কারণ?

বর্তমান যুগ তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। আমাদের সব কিছু এখন ক্রমেই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছে। প্রযুক্তি ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত থাকতে পারি না। প্রযুক্তির নিত্যদিনকার ব্যবহার আমাদের জীবনকে যেমন করে তুলছে সহজ, তেমনিভাবেই এই সকল প্রযুক্তির নেতিবাচক দিক  ও রয়েছে যা আমাদের জীবন কে প্রভাবিত করছে। আমাদের  অনেকের মনে প্রশ্ন জাগছে এই সকল প্রযুক্তির কোন নেতিবাচক দিক নেই তো? আজকে আমরা কথা বলবো মোবাইল ফোন কি আসলে ক্যান্সারের অন্যতম কারণ?আমরা মোবাইলফোনের রেডিয়েশন বিকিরণকারী প্রভাবের কথা শুনে থাকি। আসলেই কি এই রেডিয়েশনআমাদের শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী? আসুন তাহলে  আর দেরি না করে জেনে নিই প্রকৃত সত্য কি? সম্পূর্ণ  তথ্য পেতে পোস্ট টি ভালভাবে পড়ুন।

প্রশ্নের উত্তরটি এক কথায় দেওয়ার চেয়ে বরংব্যাখা করেই বলি। মোবাইল ফোনে আমরা যখন কথা বলি তখন মোবাইল ফোন এক বিশেষধরনের রেডিয়েশন তৈরি করে, যাকে বলা হয় Electromagnetic Radiation।শুধু মোবাইল ফোনই নয়, একই ধরনের রেডিয়েশন কম-বেশি বিক্ষিপ্ত হয় টেলিভিশন,রেডিও, মাইক্রোভেন, এক্স-রে, এনার্জি বাল্ব এমনকি সূর্য থেকেও।

মোবাইল ফোন কি আসলে ক্যান্সারের অন্যতম কারণ?

আমাদেরমনে মোবাইল সম্পর্কে নেতিবাচক প্রশ্নটি আসার কারণ হলো – ‘রেডিয়েশন’ শব্দটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে আসে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোন নিউক্লিয়ার স্থাপনার এক্সিডেন্টের ঘটনা! এরূপ যুক্তিহীন চিন্তার সত্যই কোন মানে হয় না।
কখনোলক্ষ্য করেছেন কি, হার্ড এক্স-রে করাতে গেলে শরীরের অন্যান্য অংশ মোটা জ্যাকেট দিয়ে আবৃত করে রাখা হয়। কেননা এক্স-রে রশ্মি বা গামা রশ্মি আমাদেরত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এমনকি বিকলাংগও করে দিতে পারে। একইভাবেদুপুরের প্রচন্ড রৌদ্রে চামড়া পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। কারণ,সূর্য থেকে অতি শক্তিশালী অতিবেগুনি রশ্মি নিঃসৃত হয়,এটি ত্বকের ক্যান্সার ঘটায় – এ কথা পুরোপুরি সঠিক।
hero-kids-with-phones-in-bed
এরূপ দু-একটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের উদাহরণ দেখেই আমরা ভেবে থাকি মোবাইলের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনও আমাদের জন্য ক্ষতিকর, কিন্তু আমরা সূর্য বা এক্স-রে এর রেডিয়েশনের পরিমাপ ও মোবাইলের রেডিয়েশনের পরিমাপ করে তুলনা করে দেখি না।

আপনি পছন্দ করতে পারেন :

সহজে ইউটিউব ভিডিওর ভিউ বাড়ানোর ৭ কৌশল

QR কোড কি? কিউ.আর কোড এর A টু Z বিস্তারিত

জেনে রাখা দরকার

ইলেক্ট্রোমেকন্যাটিক রেডিয়েশনের মধ্যে কেবল UV রশ্মি, এক্স-রে রশ্মি ও গামা রশ্মিই মানব দেহের ক্ষতি করে। অন্যান্য ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রশ্মি মানবদেহের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করতে পারে না পরিমিত পর্যায়ে। উপরিউক্ত ক্ষতিকর রশ্মিগুলোর রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি খুবই উচ্চ। এদের সংস্পর্শে আমাদের ডিএনএ এর কাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে, ফলে মিউটেশন, টিউমার, ক্যান্সার হতে পারে, এমনকি মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। যেমনঃ প্রখর সূর্যের মধ্যে ত্বক পুড়ে লালচে হয়ে যায়। আসলে সূর্যের ক্ষতিকর UV রশ্মি ত্বকের জীন কাঠামোয় ক্ষতিকর পরিবর্তন আনায় এরূপ ঘটে থাকে।
আপনারা জেনে খুশিই হবেন, আমাদের ব্যবহার করা মোবাইল, ওয়াই-ফাই কিংবা ল্যাপটপ যে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন করে তার ফ্রিকুয়েন্সির পরিমান খুবই কম। আর কম ফ্রিকুয়েন্সির রেডিয়েশনের অতটুকু ক্ষমতা থাকে না যা আপনার ডিএনএ এর কাঠামোতে কোনরূপ পরিবর্তন আনতে পারে! খুব সম্প্রতি এটি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা হয়েছে এবং গবেষণার ফলাফল নিশ্চিত করেছে -মোবাইল ফোন এর সাথে ক্যান্সারের যে ধারণা পূর্বে করা হতো তা সম্পূর্ন ভিত্তিহীন! নিচে কিছু ফ্রিকুয়েন্সি রেট দেওয়া হলো, যেগুলো তুলনা করে আপনি সহজেই এই সত্য অনুধাবন করতে পারবেন!
  • মোবাইল ফোন – মাত্র ১৯০০ MHz
  • ওয়াই-ফাই- ৬০,০০০ MHz
  • সূর্য – ৩০,০০০,০০০,০০০ MHz
নিশ্চয় এবার বুঝতে পেরেছেন, আপনার মোবাইল ফোন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী সূর্যের রশ্মি থেকে কয়েক গুণ কম রেডিয়েশন ছড়ায়, যা আপনার কোন ক্ষতিই করতে পারে না! পরিশেষে আপনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আপনার নিজেরই।
এখন আপনিই ঠিক করুন, ভুলভাল তথ্যে ভ্রান্ত হয়ে মোবাইল টেকনোলজি ত্যাগ করে বনে গিয়ে বাস করবেন নাকি আধুনিক মোবাইল প্রযুক্তিকে সাথে নিয়ে আরো আপডেটেট হবেন! অসংখ্য ধন্যবাদ!

Siam Shihab

Hello, I'm Siam Shihab. I write Content about all Trending News and Information. I'm working on this Website since June 2021. You can Visit my Profile page to read all of my content. Thank You so much to know about me.
Back to top button
Close