Assignment

একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সফলতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলী বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর – উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন;

২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী বন্ধুরা তোমাদের জন্য দ্বিতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা পাঠ্যবইয়ের দ্বিতীয় পত্রের দ্বিতীয় অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সফলতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলী বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর– উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন করতে দেয়া হয়েছে। আজ তোমাদের জন্য ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্রের দ্বিতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সফলতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলী বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর উক্তিটির যথার্থতা বিশ্লেষণ সংক্রান্ত ক্লাস নিয়ে হাজির হলাম।

এই প্রবন্ধটি উদ্ধার করার মাধ্যমে তোমরা ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় সপ্তাহে ব্যবসা সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্রের অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর যথাযথ ভাবে লিখতে পারবেন এবং একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সফলতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলী বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর এই উক্তির আলোকে যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারবে।

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় অ্যাসাইনমেন্ট

সকল সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন সরকারি বেসরকারি কলেজ সমূহ থেকে 2024 সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র থেকে দ্বিতীয় অ্যাসাইনমেন্ট নেওয়া হয়েছে পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের ব্যবস্থাপনার ধারণা থেকে।

অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা ব্যবস্থাপনার ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে, ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে, ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী ব্যাখ্যা করতে পারবে, ব্যবস্থাপনা সার্বজনীন বিশ্লেষণ করতে পারবে।

নিচের ছবিতে এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ এর ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো-

Business-Org-2nd-Paper-2-1140x580

 

অ্যাসাইনমেন্টঃ একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সফলতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলী বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর – উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন;

এই এসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের যে সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে:

ক. ব্যবস্থাপনার ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে।

খ.  ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে হবে।

গ.  ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী বর্ণনা করতে হবে।

ঘ. প্রতিষ্ঠান সার্বিক সাফল্যের জন্য ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী কিভাবে প্রয়োগ করতে হয় তা বিশ্লেষণ করতে হবে।

আরও দেখুন :এসএসসি পরীক্ষা ২০২৩ হিসাব বিজ্ঞান ২য় সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় অ্যাসাইনমেন্ট  উত্তর

তোমাদের জন্য ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় সপ্তাহের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্রের অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নির্দেশনা ও মূল্যায়ন সমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করে একটি নমুনা উত্তর প্রদান করা হলো।

এখানে অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন পত্র উল্লেখিত নির্দেশনা সমূহ অর্থাৎ প্রশ্নসমূহ ধারাবাহিকভাবে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও যা অনুসরণ করে তোমরা ভাল ভাবে ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্রের দ্বিতীয় সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ভালো ভাবে সম্পন্ন করতে পারবে এবং আশা করছি ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবেন।

একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সফলতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলী বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর

২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সব তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টে ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্রের দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট উল্লেখিত একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সফলতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলী বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর এই উক্তির আলোকে যথার্থতা মূল্যায়ন করে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া হলো।

ক. ব্যবস্থাপনার ধারণা:

ব্যবস্থাপনা শব্দর্টি ইংরেজি Management শব্দের প্রতিশব্দ। ইংরেজি Management শব্দর্টির সমার্থক শব্দ হিসেবে ‘to handle গণ্য করা হয়, যার অর্থ চালনা করা বা পরিচালনা। ইংরেজি এর শব্দর্টি অধিকাংশের মতে ল্যাটিন শব্দ ‘maneggiare’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘to trained up the horses’ অর্থাৎ অশ্ব কে প্রশিক্ষিত করে তােলা।

প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য এতে নিয়ােজিত উপকরণাদির সঠিক ব্যবহারের সকল প্রয়াস ও প্রচেষ্টাকে ব্যবস্থাপনা বলে। এরূপ প্রয়াস বা প্রচেষ্টার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে ব্যবস্থাপক বলা হয়। একটি প্রতিষ্ঠান দুই ধরনের উপকরণ থাকে মানবীয় ও বস্তুগত মানবীয় উপকরণ বলতে মানুষ বা জনশক্তি বা কর্মীবৃন্দকে বােঝায়।

বস্তুগত উপকরণ বলতে যন্ত্রপাতি, মালামাল,অর্থবাজার পদ্ধতিকে বােঝায়। এদের সংক্ষেপে 6m (Man, Money, Materiz/s, Money, Market, Method) বলা হয়। এ সকল উপকরনের কার্যকর ব্যবহার সম্ভব হলে একটি প্রতিষ্ঠান তাদের কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করতে পারে।

তাই প্রকৃত অর্থে উপকরণাদি কার্যকর ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় সাধন প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা বলে।

খ. ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব বিশ্লেষণ:

যেকোনাে সঙঘবদ্ধ প্রচেষ্টায় ব্যবস্থাপনা একৰ্তি শক্তিশালী উপাদান। এটি এমন এক শক্তি যা প্রতিষ্ঠানের সকল উপায়-উপকরণ কে কার্যকরীভাবে সংগঠিত ও লক্ষ্যপানে পরিচালিত করে। এমনই প্রতিষ্ঠানকে সফলতা দান করে তেমনি ব্যবস্থাপনা কার্যে অদক্ষতা প্রদর্শিত হলে উপায়-উপকরণ যত উন্নত হােক না কেন তা কোন কার্যকরী ফল দিতে পারে না। তাই প্রতিটি পরিবার সমাজ প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্রসহ সর্বত্রই সঠিক পরিচালনা ব্যবস্থা করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ে ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব আলােচনা করা হলাে:

১) উপকরণাদি সুষম ব্যবহার: উপকরণ বলতে কার্য সম্পাদনের জন্য ব্যবহৃত বস্তুকে বােঝায়। তাই উৎপাদনের কাজে লাগে এমন প্রয়ােজনীয় বক্তকে উৎপাদনের উপকরণ বলে। ভূমি, শ্রম মূলধন ইত্যাদি উপকরণ কোথাও থাকাই উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়।

এগুলাে যথাযথ ব্যবহারের জন্য যে বিষয়র্টি গুরুত্বপূর্ণ তাই ব্যবস্থাপনা। ব্যবস্থাপনা হল সেই ধরনের কাজ যা অসংগঠিত মানুষ ও অবস্তুগত সম্পর্কে ব্যবহারযােগ্য ফলদায়ক পরিণতির দিকে নিয়ে যায়। তাই উপকরণের কার্যকর ব্যবহারে যােগ্য ব্যবস্থাপনার বা ব্যবস্থাপকের বিকল্প নেই।

২) দক্ষতা বৃদ্ধি : দক্ষতা হলাে কম খরচে বেশি কাজ বা লাভের সামর্থ্য। সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারাে দক্ষতা হিসেবে গণ্য। ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা বৃদ্ধি করে। কারণ উত্তম ব্যবস্থাপনার অধীনে এর প্রতিটা জনশক্তির দক্ষতা বাড়ে, ফলে বস্তুগত উপকরণ যেমন- যন্ত্রপাতির, কাঁচামাল, মূলধনের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। এতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং মুনাফার পরিমাণ ও বৃদ্ধি পায়।

৩) শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা : শৃঙ্খলা রীতি, নিয়ম-নীতি, সুব্যবস্থা ইত্যাদিকে বােঝাই একটি প্রতিষ্ঠানে যদি এগুলাে না থাকে তবে ওই প্রতিষ্ঠানের কখনােই ভালাে চলতে পারে না। একটা প্রতিষ্ঠান, সমাজ, রাষ্ট্র ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে এ বিষয়টি প্রযােজ্য। একটা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব থাকে মূলত পরিচালক বা ব্যবস্থাপনার ওপর। তারা যদি তাদের কাজের মধ্য দিয়ে সর্বক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হন তবে প্রতিষ্ঠানগুলাে চলতে পারেনা।

আমাদের দেশের সর্ব ক্ষেত্রে বিশৃংখলার পেছনে মূল কারণ হলাে ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনের অদক্ষতা।

৪) উত্তম সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা : একটা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ যেমন – মালিক, ব্যবস্থাপক, শ্রমিক কর্মী, ক্রেতা ও ভােক্তা সরবরাহকারী ইত্যাদি সবার সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকা বর্তমানকালে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটা প্রতিষ্ঠান দক্ষ ব্যবস্থাপনায় শুধুমাত্র তা নিশ্চিত করতে পারে।

একটা পরিবারের বাবা-মার মধ্যে উত্তম সম্পর্ক না থাকে তবে ওই পরিবারে অশান্তির শেষ থাকে না। সন্তানের মধ্যে অস্থিরতা, অস্বাভাবিকতা জন্ম নেয়। একটা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও সর্বত্র ভাবে। প্রযােজ্য মালিক ও ব্যবস্থাপনার মধ্যে যদি সুসম্পর্কের অভাব থাকে, গ্রুপিং-লবিং যদি নিত্যদিনের। বিষয় হয় তবে নীচের স্তরে কর্মরত শ্রমিক কর্মীরাও তার দ্বারা দ্রুত প্রভাবিত হয়ে থাকে।

এতে প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক, স্বচ্ছন্দ ও কর্মমুখী পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।একটা প্রতিষ্ঠানের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় শুধু সর্বস্তরে উত্তম সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে সে অবস্থা থেকে প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষা দান ও সামনে এগিয়ে নিতে পারে।

৫) কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি: কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি বলতে মানুষকে কাজে লাগানাের মত নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি কে বুঝায়। উত্তম ব্যবস্থাপনা শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন নিশ্চিত করে না, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও নতুন নতুন ব্যবসায় গঠনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশের স্কয়ার গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, প্রাণ গ্রুপ এ সকল প্রতিষ্ঠান দেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে তা তাদের ব্যবস্থাপনার দক্ষতার কারণে সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী অনেকেই তাদের ব্যবস্থাপনা দক্ষতার কারণে নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নতুন নতুন কারখানা গড়ে হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছেন।

গ. ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী বর্ণনা করতে হবে

ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী: প্রক্রিয়া বলতে পরস্পর নির্ভরশীল ধারাবাহিক কাজের সমষ্টিকে বােঝায়। ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াতেও এমন কতগুলাে উপকরণে রয়েছে যার ধারাবাহিক আবর্তনের ফলে ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

১) পরিকল্পনা : ভবিষ্যতে কি করা হবে তা আগাম ঠিক করে রাখার নামই হলাে পরিকল্পনা। ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার প্রথম ও প্রধান কাজই হলাে পরিকল্পনা। এটি ব্যবস্থাপনায় অন্যান্য কাজের ভিত্তি স্বরূপ। পরিকল্পনা অনুসারে ব্যবস্থাপনার অন্যান্য কাজ ধারাবাহিকতা মেনে সম্পন্ন হয়।

তাই পরিকল্পনা গ্রহণের ব্যবস্থাপক গণিত অত্যন্ত সতর্ক হওয়া প্রয়ােজন পড়ে। শুধু কি করা হবে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ কে পরিকল্পনা হিসেবে না দেখে কখন ও কোথায় করা হবে, কত সময়ের মধ্যে করতে হবে, কে বা কারা তার সম্পাদন করবে ইত্যাদি প্রয়ােজনীয় সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার প্রয়ােজন। পড়ে তবে তা একটি আদর্শ পরিকল্পনা বিবেচিত হয়।।

২) সংগঠন : গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য উপকরণাদি কে সংগঠিত ও কাজে লাগানাের উপযােগী করাকে সংগঠন বলেন। ইট, বালি, সিমেন্ট রড় ইত্যাদি যখন আলাদা থাকে তখন তা সৃষ্টি করতে পারে না। এই উপকরণগুলােকে যখন একত্রিত করে নির্মাণের কাজে লাগানাে হয় তখন তা থেকে বিল্ডিং, সেতু ইত্যাদি নির্মিত হয়।

মানুষগুলাে যখন আলাদা থাকে তখন তাদের দ্বারা ও কিছু সৃষ্টি হয় না। কিন্তু যখন এই মানুষগুলােকে কাজ বুঝিয়ে দেয়া হয়, দায়িত্ব ক্ষমতা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়, একের সাথে অন্যের সম্পর্ক বলে দেয়া হয় তখনই মানুষগুলাে একটি সংগঠনের রূপায়িত ও কর্মক্ষম হয়ে ওঠে।

তাই উদ্দেশ্যে অনুযায়ী কাজকে বিভাজন, প্রতিটি কাজের জন্য দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্দিষ্টকরণ এবং সে অনুযায়ী উপায়-উপকরণ সংহত করে তাদের মধ্যে সম্পর্ক নির্দিষ্ট করার কাজকে সংগঠন বলা হয়ে থাকে।

৩) কর্মসংস্থান : প্রতিষ্ঠান জন্য যােগ্য ও দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তােলার লক্ষ্যে উপযুক্ত কর্মী সংগ্রহ, নির্বাচন, নিয়ােগ ও উন্নয়নের কাজকেই কর্মসংস্থান বলে। সংগঠন প্রক্রিয়ায় কাজ এবং প্রতিটা কাজের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্ধারণের পর ওই কাজ সম্পাদনের জন্য যােগ্য জনবল সংস্থানের প্রয়ােজন পড়ে।

এই জনবলের যােগ্যতা, আগ্রহ ও আন্তরিকতার ওপর প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে। তাই কর্মী নিয়ােগে ভুল করলে প্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘমেয়াদে তার কুফল ভােগ করতে হয়। তাই কোথায়, কোন মানের, কি সংখ্যক লােকের প্রয়ােজন সে অনুযায়ী যােগ্য কর্মী নিয়ােগ করতে হয়।

৪) নেতৃত্বদান : কোন দল বা গােষ্ঠীর আচরণ ও কাজকে উদ্দেশ্যপানে এগিয়ে নেওয়ার কৌশলকে নেতৃত্ব বলে। যিনি বা যারা এরূপ প্রয়াস চালান তাকে বা তাদেরকে নেতা বলা হয়ে থাকে। নেতৃত্ব দানের বিষয়টি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক অর্থবােধক শব্দ। প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য আদেশ দেওয়া, পরিচালনা করা, প্রভাবিত করা, উৎসাহিত করা স্বেচ্ছাপ্রণােদিত করা, দলগত প্রচেষ্টা জোরদার করা ইত্যাদি বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত।

তাই ব্যবস্থাপনায় নির্দেশনা, প্রেষণা ও সমন্বয় কাজ নেতৃত্বের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হয়। সেজন্য আমেরিকান বইগুলােতে ব্যবস্থাপনার কাজ উল্লেখ করতে যেয়ে পরিকল্পনা, সংগঠন, নেতৃত্বদান ও নিয়ন্ত্রণ এভাবে কাজের পরম্পরা উল্লেখ করা হয়ে থাকে। অবশ্য এখন অনেকেই পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মসংস্থান, নেতৃত্বদান ও নিয়ন্ত্রণ -এই ৫টি কাজকে ব্যবস্থাপনা কাজ হিসেবে গণ্য করেন। নিম্নে নেতৃত্তের আওতাধীন ব্যবস্থাপনার কাজ সমূহ উল্লেখ । করা হলাে:

ক) নির্দেশনা : অধস্তন জনশক্তিকে প্রয়ােজনীয় নির্দেশ দান, তত্ত্বাবধান, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং অনুসরণ কার্যকে নির্দেশনা বলে। যােগ্য জনবল কোথাও থাকলে তারা কাজ করবে এমন প্রত্যাশা করা যায় না, কি কাজ করবে এ বিষয়ে সময়ে-অসময়ে আদেশ নির্দেশ প্রদান করতে হয়।

তারা সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা বা করতে পারছে কিনা তার তত্ত্বাবধানে প্রয়ােজন পড়ে। ক্ষেত্রবিশেষে উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করতে হয়।

খ) প্রেষণা : অধঃস্তন কর্মীদের কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত ও স্বেচ্ছাপ্রণােদিত করার কাজকে প্রেষণা বলে। কর্মীদের কোন কাজ করতে বললে তারা সবসময় আন্তরিকতা নিয়ে সম্পাদন করবে এটা আশা করা যায় না। যন্ত্রপাতি সহ অন্যান্য বস্তুগত উপকরণের সাথে জনশক্তির এখানেই বড় পার্থক্য বিদ্যমান। জনশক্তি যদি কাজে স্বতঃস্ফুর্ত ও স্বেচ্ছাপ্রণােদিত না হয় তবে তাদের যত আদেশ নির্দেশ প্রদান করা হােক, তত্ত্বাবধান করা হােক তা কখনােই কাঙিক্ষত ফল দিতে পারেনা। ভীতি প্রদর্শন বা কাজের চাপ সৃষ্টি করলে স্বল্প সময়ের জন্য কখনাে কিছুটা ভালাে করে লক্ষ্য করা গেলেও বাস্তবে তা কার্যকর নয়। তাই ব্যবস্থাপনার পক্ষ থেকে কর্মীদের উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করে কাজ আদায় এবং প্রতিষ্ঠান ধরে রাখার কাজ বর্তমানকালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর্থিক ও অনার্থিক বিভিন্ন ধরনের প্রণােদনা দেয়ার প্রয়ােজন পড়ে।

গ) সমন্বয় সাধন : বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের কাজকে এক সূত্রে গ্রথিত ও সংযুক্ত করার কাজকে সমন্বয় বলে। একটা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগ কাজ করে। প্রতিটা ব্যক্তি ও বিভাগ যদি নিজেদের ইচ্ছামতােই কাজ করে, অন্যের সাথে নিজের কাজের সমন্বয় – সংযুক্তির বিষয়র্টি না ভাবে তবে দেখা যাবে এক পর্যায়ে সামগ্রিক কাজের প্রচণ্ড বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। সম্মিলিত যেকোনাে কাজ সকল ব্যক্তি ও বিভাগকে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জন বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একে অন্যের সাথে তাল মিলিয়ে চলার প্রয়ােজন পড়ে। এটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব উর্ধতন নেতৃত্বের।

৫) নিয়ন্ত্রণ : পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদি সম্পন্ন হয়েছে কিনা তা পরিমাপ, ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তা নির্ণয় ও বিশ্লেষণ এবং প্রয়ােজনীয় সংশােধনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রক্রিয়া কে নিয়ন্ত্রণ বলে। প্রতিষ্ঠানের যেকোনাে কাজ শুরুর পূর্বে পরিকল্পনা প্রণীত হয়। তার আলােকে উপায়উপকরণাদির সংহত করা হয়ে থাকে। এরপর অধস্তনদের প্রয়ােজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়। কার্য চলাকালে বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয় সাধন করা হয়।

এরপর সময় শেষে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ কতটা সম্পন্ন হয়েছে তা মূল্যায়নের প্রয়ােজন পড়ে। এতে ব্যবস্থাপনা কার্য কতটা দক্ষতার সাথে পরিচালিত হয়েছে তার প্রমাণ মেলে। এতে ব্যবস্থাপনার জবাবদিহিতা ও কার্য দক্ষতার মান বৃদ্ধি পায়।

ঘ. প্রতিষ্ঠান সার্বিক সাফল্যের জন্য ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী কিভাবে প্রয়োগ করতে হয় তা বিশ্লেষণ

প্রতিষ্ঠান সাফল্যের জন্য ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী সঠিকভাবে প্রয়ােগ যৌক্তিক ভাবে উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করা হলাে: ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে পরিকল্পনা অনুসারে কার্য সম্পাদনের উপর। আর পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়ােজন উওম ব্যবস্থাপনা।

প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে এবং উপায়-উপাদানের সুষ ব্যবহারের লক্ষ্যে পরিকল্পনা সংগঠন নির্দেশনা প্রেষণা সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে ব্যবস্থাপনা বলে এ সকল কাজে প্রতিষ্ঠানের উচ্চ স্তর হতে নিম্নস্তর পর্যন্ত সকলেই কম-বেশি সম্পাদন করা হয়। তাই ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান কোন একটিমাত্র স্থলে সীমাবদ্ধ কথা বলা যায়না নিন্মে ব্যবস্থাপনার স্তর সমূহ আলােচনা করা হলাে:

১) উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা: প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের নির্বাহীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ব্যবস্থাপনাকে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলে। প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ এবং দীর্ঘ মেয়াদী কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়নের সঙ্গে ব্যবস্থাপনার উচ্চপর্যায়ে সম্পৃক্ত থাকে। কোন কোম্পানির পরিচালক মন্ডলী, পরিচালক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সচিব ও ক্ষেত্রবিশেষে জেনারেল ম্যানেজার এ পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত।

২) মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা: উচ্চ পর্যায়ে গৃহীত লক্ষ্য পরিকল্পনা ও নির্দেশনা বাস্তবায়নের নিম্নপর্যায়ের ব্যবস্থাপককে কাজে লাগাতে ব্যবস্থাপনা যে পর্যায়ে কাজ করে তাকে মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলে। এরূপ পর্যায়ে উচ্চ ও নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার মধ্যে সেতুবন্ধকের ভূমিকা পালন করে। এরূপ ব্যবস্থাপনার উচ্চপর্যায়ের গৃহীত লক্ষ্য নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়ােজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ, উপকরণাদি সংগঠিতকরণ, পরিচালনা, নেতৃত্ব প্রদান, সমন্বয় এবং নিয়ন্ত্রণ কার্য পরিচালনা করে।

৩) নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা: মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃক গৃহীত পরিকল্পনা ও নীতি-কৌশল মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যবস্থাপকগণ নিম্নপর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলে। এ পর্যায়ের উপরে দিকে থাকে মধ্যপর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ, নিচের দিকে থাকে ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কর্মী বা শ্রমিক।

নিচের দিক থেকে উপর দিকে চিন্তা করলে একেবারে প্রথম সারির ব্যবস্থাপকগণ এ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। এ পর্যায়কে তত্ত্বাবধান পর্যায় নামেও আখ্যায়িত করা হয়।

ব্যবস্থাপনার কাজকে প্রকৃতিগত ভাবে চিন্তা করা ও কাজ করা এই দুই ভাগে ভাগ করা হলে উচ্চপর্যায়ে ব্যবস্থাপনা অধিকমাত্রায় চিন্তনীয় কাজ এবং নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা অধিকমাত্রায় সরাসরি কাজের তত্ত্বাবধানের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। অন্যদিকে মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত নির্বাহীগণ মােটামুটি ভাবে উভয় ধরনের কর্ম সম্পাদন করে।

বন্ধুরা এই ছিল তোমাদের জন্য ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় সপ্তাহের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্রের দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট এর উত্তর। আশা করছি এটা অনুসরণ করার মাধ্যমে তোমরা ভাল ভাবে তোমাদের অ্যাসেসমেন্ট সম্পন্ন করতে পারবেন এবং একটি প্রতিষ্ঠান সার্বিক সফলতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনার মৌলিক কার্যাবলী বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের উপর এই উক্তির আলোকে যথার্থতা মূল্যায়ন করতে পারবে।

আরও দেখুন :

 

Tags

Siam Shihab

Hello, I'm Siam Shihab. I write Content about all Trending News and Information. I'm working on this Website since June 2021. You can Visit my Profile page to read all of my content. Thank You so much to know about me.
Back to top button
Close