Tech

প্রযুক্তির ১০টি সেরা আবিষ্কার যা ভবিষ্যতকে শাসন করবে

প্রযুক্তি যেমন পালটে দিয়েছে মানুষের জীবন ঠিক তেমন ভাবে দিন দিনপালটে দিচ্ছে এই পৃথিবীকে। বিজ্ঞানের এই নতুন নতুন প্রযুক্তি গুলো পৃথিবীকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে।প্রিয় বন্ধুরা আজকে কথা বলবো  প্রযুক্তির ১০টি সেরা আবিষ্কার নিয়ে যা ভবিষ্যতকে শাসন করবে। প্রযুক্তির অসাধারন ১০টি আবিষ্কার কি তা জানতে হলে পুরো পোস্ট টি ভালভাবে পড়ুন। তাই আর দেরি নাহ করে চলুন দেখে নেওয়া যাক।

কোয়ান্টাম কম্পিউটার টেকনোলজি

কুয়ান্টামকম্পিউটার হলো পৃথিবীর সব চেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটার। ১০টি সেরা প্রযুক্তি(টেকনোলজি)র তালিকায় প্রথমেই আছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার টেকনোলজি। ১৯৮০ সালনাগাদ যেটি শুধু কল্পনা ছিল তা ২০২৩ এ এসে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। ২০০১ সালেকুয়ান্টাম কম্পিউটার প্রথম তৈরি করা হয় কিন্তু সেটির ক্ষমতা ছিলো অনেক কমকিন্তু ২০১৯ সালে তৈরিকৃত কোয়ান্টাম কম্পিউটার অতীত এর সব ধারণা কে পালটেদিয়েছে। শুধু মাত্র ল্যাবরেটরি তে কুয়ান্টাম কম্পিউটারের ব্যাবহার শুরুহলেও আই বি এম প্রথম তাদের কোয়ান্টাম কম্পিউটার বাজারে নিয়ে আসে যা সর্বত্র ব্যাবহার করা সম্ভব।

image-362165-1604742930


২০২৩সালের শেষের দিকে গুগল বাজারে নিয়ে আসে শক্তিশালী ৫৩-কিউবিট কুয়ান্টামপ্রসেসর যা কুয়ান্টাম কম্পিউটারের ধারণা কে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। এইসিকেমর কুয়ান্টাম প্রসেসর এতটাই শক্তিশালী ও দ্রুত যে অতীতের সকল শক্তিশালীকম্পিউটার কে পেছনে ফেলে দেয়। ১০ হাজার বছরের ক্যালকুলেশন মাত্র ২০০সেকেন্ডে করতে পারে এই সিকেমর প্রসেসর।

টেলিপোর্টেশন প্রযুক্তি

কুয়ান্টামকম্পিউটারের সাথেই সহযোগী টার্ম টেলিপোর্টেশন। টেলিপোর্টেশন প্রযুক্তিঅন্যতম সেরা প্রুযুক্তি বা টেকনোলজি ভবিষ্যতের জন্য। মানুষের এই প্রযুক্তিব্যাবহারে সুযোগ যদিও এখন নেই কেননা এখনো টেলিপোর্টেশন এর উপরে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ২০২৩ সালে বিজ্ঞানীরা কুয়ান্টাম কিউট্রেট এরউপরে এই প্রযুক্তি সফলভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষমহয়েছেন।ত্রি-মাতৃক এনালগ এইকিউট্রেট কিউবিট এর চেয়ে একধাপ এগিয়ে।কিউবিট এ বাইনারি ১ ও ০ ব্যাবহার করা হলেও কিউট্রেট এ ১,০ এবং ২ সংখ্যা ব্যাবহার করা হয়েছে।এটি গুগলের বর্তমানকুয়ান্টাম কম্পিটারের চেয়েও শক্তিশালী যা আলোর গতিতে স্টেট ট্রান্সফার করতেসক্ষম এবং ফোটন এর মাধ্যমে এটি কাজ করে।এই প্রযুক্তি দ্বারা তৈরিকম্পিউটার কখনো হ্যাক করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন এর বিজ্ঞানীরা।
download

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি

২০২৩ সালে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তিতে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়। এইমুহূর্তে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি বিশ মাতানো সেরা প্রযুক্তিরঅন্যতম। এটি অনেক বেশি ছড়িয়ে পরতে থাকে চারদিকে । আমাদের কল্পনারও বাইরেএটি কাজ করে।নতুন ড্রাগ এবং মেশিনের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি হয়েছে আরশক্তিশালী।মানুষের চিন্তা ভাবনা পড়া থেকে শুরু করে মহাকাশের অতীত অবস্থা ওনানান রূপ দেখাতে সক্ষম এই প্রযুক্তি।এবং যে কোন ধরণের ক্রাইম বা অপকর্মখুব সহজেই ধরিয়ে দেয়া বা তার সমাধান করা সহজ করে দিয়েছে।২০২৩ সালের এই প্রযুক্তি সাড়া ফেলেছে পুরো বিশ্ব জুরে যা অভাবনীয়।

ফেসিয়াল রিকোগনেশন টেকনোলজি

ফেসিয়ালরিকোগনেশন ২০২৩ সালের সেরা প্রযুক্তি গুলোর মাঝে একটি।এই প্রযুক্তি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা কল্পনারও অতীত।বিভিন্ন মোবাইল ও ল্যাপটপ ডিভাইসে এইপ্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয়।ব্যাবহার করা হয় টাকা তোলার এটীএমমেশিনেও।সম্প্রতি চায়না তে এক লোক তার প্রেমিকা কে হত্যা করে এবং ফেসিয়ালরিকোগনেশন ব্যাবহার করে প্রেমিকার একাউন্ট থেকে টাকা ওঠাতে গেলে মেশিন বুঝেফেলে যে মেয়ে টি জীবিত নয় এবং পুলিশ কে জানায়।তাহলে বুঝতেই পারছেন কতটা এডভান্স প্রযুক্তির যুগে আমরা ।  

সাইবার ট্রাক প্রযুক্তি

২০২৩সালে প্রযুক্তি নির্মাতা এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স বাজারে নিয়েআসে সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক “টেসলা সাইবার ট্রাক”।যা চার্জ এর মাধম্যে চলে এবংদ্রুত গতি সম্পন্ন।সম্প্রতি এটি ব্যাপক হারে সাড়া ফেলেছে পুরো বিশ্বে। এবংঅবাক করে দিয়ে অন্য যে কোন ইঞ্জিন চালিত গাড়ির মতই সক্ষম এই সাইবার ট্রাক।আরো অবাক করা বিষয় হলো একবার চার্জ দিলে এই গাড়িটি প্রায় ২৪৮.৫ মাইল থেকে ৪৯৭ মাইল বা ৪০০-৮০০ কি.মি. প্রায় পর্যন্ত চলতে সক্ষম।তাও আবার ১.৫ টনকার্গো সাথে ৬ টনের ট্রেলার নিয়ে।  সুতরাং নিশ্চই এটি একটি অভাবনীয় আবিষ্কার বলা যেতে পারে।তাই নয় কি?  

এক্সো স্কেলিটন টেকনোলজি

২০২৩ সালে ইউনিভার্সিটি অফ গ্রেনেবল এল্পস ও ফ্রেঞ্চ ক্লিনাটেক এর বিজ্ঞানীরাযৌথ ভাবে এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন যার মাধ্যমে যেকোনো প্যারালাইজড মানুষচলাচল করতে পারবে ও প্রায় সব ধরণের কাজ করতে সক্ষম হবে। যদিও প্রথম টেষ্টেরোগী মাত্র ১৪৫ মিটার চলতে সক্ষম হয়েছিলো কিন্তু ভবিষ্যতে আরো উন্নতি সাধনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ভাবে ব্যাবহার উপযোগী হবে বলে তারা আশাবাদী। 

ন্যনো পার্টিকেলস প্রযুক্তি

ইউনিভার্সিটিঅফ ম্যাসেচুসেট মেডিকেল স্কুল এর গবেষকগন এক নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করেনন্যনো পার্টিকেলস ব্যাবহার করে। তারা খুব দুষ্প্রাপ্য মৌল আরবিয়াম ওইথারবিয়াম ব্যাবহার করে এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন যা আমাদের চোখের দৃষ্টিক্ষমতাকে আলাদা এক লেভেলে নিয়ে যাবে।এটি একটি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগকরা হয়।এটির মাধ্যমে রাতেও পরিষ্কার দেখা সম্ভব হবে।এটি চোখে সবুজ আলো সৃষ্টি করে যা এমন ক্ষমতা দেয়। বর্তমানে ইঁদুরের উপরে পরীক্ষা করা হলেও ভবিষ্যতে মানুষ এ প্রয়োগ করা হবে এই প্রযুক্তি। 

কোরপ্যাথ জি আর এক্স রোবট টেকনোলজি

ইতিহাসে প্রথমবারের মত একজন ডাক্তার একজন রোগির অপারেশন করেন ২০ মাইল বা ৩২কিলোমিটার দূর থেকে এই প্রযুক্তি ব্যাবহার করে যা সত্যিই অকল্পনীয়। রিমোটকন্ট্রোলের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি দ্বারা অনেক দূর থেকেও এমন অপারেশন করাসম্ভব।এই প্রযুক্তি সত্যিই নতুন যুগের সূচনা করেছে।এভাবে মানুষ কে খুবসহজেই চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভভ হবে।এই প্রযুক্তি যদি আর উৎকর্ষ সাধন করেতবে ধারণা করা যায় যে ভবিষ্যতে এই রোবট নিজেই এধরনের চিকিৎসা দিতে সক্ষম হবে কোন ডাক্তার এর উপস্থিতি ছাড়াই।

ন্যনো রোবটস প্রযুক্তি

ডাক্তার পিয়েরে ডুপান্ট ও বোস্টন শিশু হসপিটালের সহযোগীদের সহায়তায় এমন একপ্রযুক্তি আবিষ্কার করেন যা স্বাধীন ভাবে যে কোনো প্রানীর দেহে প্রবেশ করে সমস্যা খুজে বের করতে সক্ষম এবং নিজে থেকে সেই সমস্যার সমাধান করতে পারে।বিশেষ করে হৃদপিণ্ড। এটি হৃদপিণ্ডে প্রবেশ করে যে কোন ধরণের সমস্যাখুজে বের করতে সক্ষন এবং প্রয়োজন  অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে সক্ষম।যদিও এটি পশুরহৃদপিণ্ডে সফল ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে তাই মানুষ এর মধ্যেও খুব দ্রুতই প্রয়োগ হবে হয়তো। 

ক্যান্সার ডিটেক্টর টেকনোলজি

বর্তমানসময়ে ক্যান্সার একটি ভয়াবহ সমস্যা।সব চেয়ে বড় ব্যাপার হলো ক্যান্সার সহজেইনির্ণয় করা সম্ভব হয় না। ২০২৩  সালে তোশিবা কম্পানি নিয়ে আসে নতুন এক মেশিন যা ১৩ প্রকারের ক্যান্সার শনাক্ত করতে সক্ষম এবং প্রায় ৯৯% সঠিক ভাবে।এরজন্য শুধু মাত্র এক বিন্দু রক্ত ই যঠেষ্ট।এই মেশিনের মাধ্যমে খুব বেশিবিপদজনক অবস্থায় পৌছানোর পূর্বেই ক্যান্সার শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করে দিয়ে বাঁচানো যাবে প্রান।
 
সুতরাংবুঝতেই পারছেন ২০২৩ সালে প্রযুক্তি কতটা উৎকর্ষ সাধন করেছে। পালটে দিয়েছেপৃথিবীর চিত্র।এভাবে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী।প্রযুক্তির এই নতুন নতুনউদ্ভাবন যেমন মানুষের জীবন করে দিয়েছে সহজ তেমন ভাবে সমৃদ্ধ করেছে বিজ্ঞানকে।বিজ্ঞানের এই অভাবনীয় সাফল্য সত্যিই অতুলনীয়।

Siam Shihab

Hello, I'm Siam Shihab. I write Content about all Trending News and Information. I'm working on this Website since June 2021. You can Visit my Profile page to read all of my content. Thank You so much to know about me.
Back to top button
Close