Tech

ইমোজির ইতিহাস জেনে নিন :P :D :) :3

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ভাবধারা আমরা সাধারণত লিখে প্রকাশ করতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করি – হোক সেটা পরীক্ষার খাতা, বক্তৃতা বা সংবাদমাধ্যম, চিঠি বা লাইফ চ্যাটিং! কিন্তু কথায় বলে, ‘একটি ছবি হাজারটা কথার সমান!’ কেমন হয়, যদি লিখিত টেক্সট এর সাথে ছবি যুক্ত করে দেওয়া যায় যা আপনার মনের ভাব প্রকাশ করবে?

আপনারা নিশ্চয় লক্ষ্য করে থাকবেন অনলাইন দুনিয়ায় নানান পোস্টে এসব ছোট ছোট ইমেজ ব্যবহৃত হয় এবং আপনি নিজে হয়তো এরূপ ইমেজ ব্যবহার করেন! এসব ইমেইজকে বলা হয়  ইমোজি (emoji)’৷ এই ইমোজির ব্যবহার কখন থেকে এব্ং কিভাবে শুরু হলো?! চলুন আজ তাহলে আমরা সেটাই জেনে নিই!!

ইমোজির ইতিহাস

১৬৬৮ সালে ‘To Fortune’ নামক এক আর্টিকেলে লেখক তার অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য একটি বাক্যের শেষে ব্রেকেটের মধ্যে লিখেছিলেন ‘smiling yet’। লেখকের এই চিন্তাকেই ইমোজির ধারণা শুরু হিসেবে ধরা হয়, যদিও এটিতে কোন ইমেইজ ছিলো না। ?
১৮৮১ সালের দিকে ম্যাগাজিনগুলোর মধ্যে রীতিমতো  প্রতিযোগিতা শুরু হয় TYPOGRAPHICAL ART নিয়ে। এর অর্থ হলো বিভিন্ন বিরামচিহ্ন যেমনঃ কমা, দাড়ি, ব্রেকেট ইত্যাদি ব্যবহার করে নানা ধরনের চেহারা বা জিনিসের আকার দেওয়া যার মাধ্যমে বিভিন্ন ইমোশনাল বুঝা যায়!
Set-of-cartoon-vector-emoticons-isolated-on-white-background
এরপর থাকে খুব দ্রুতগতিতে ইমোজির উন্নয়ন ঘটতে থাকে। পরবর্তী ১০০ বছরে ইমোজি ব্যাপক জনপ্রিয়িতা অর্জন করে দুনিয়া জুড়ে। তখন অবশ্য একে ইমোজি বলা হতো না, তখন একে ডাকা হতো Emoticon নামে। ১০০ বছর পরে ইমোটিকন ধীরে ধীরে আধুনিক রূপ ধারণ করতে লাগলো।

আরও  দেখুন: মোবাইল ফোনের ১৫টি আশ্চর্যজনক গোপন ফাংশন

১৯৮২
সালে প্রফেসর স্কট ফলম্যান লক্ষ্য করলেন মানুষের মধ্যে নানা কারণে হতাশা তৈরি হচ্ছে। তাই তিনি নতুন কিছু করতে চাইলেন যা দিয়ে হতাশাকে আনন্দে রূপান্তর করা যায়! প্রতীকি স্বরূপ তিনি ইংরেজী বিরামিচিহ্ন থেকে দুইটি ডট, একটি হাইফেন ও একটি ব্রেকেট দিয়ে তৈরি করলেন ‘হতাশা প্রতীক’ এবং পুনরায় ওই বিরামচিহ্ন ব্যবহার করেই শুধু উল্টো ব্রেকেট ব্যবহার করে তৈরি করলেন ‘আনন্দের প্রতীক’ যাকে তিনি নাম দিলেন ‘joke mark‘। তিনি এই দুইটি ইমোটিকন্স তার এক বন্ধুকে ইমেইল করে পাঠান এবং এর পর থেকেই অনলাইন দুনিয়ার ইমোটিকনস নিয়ে তোড়পাড় শুরু হয়।
এই ঘটনার পর থেকে সাড়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত হতে নানা ব্যবহারকারী নিজেদের মতো করেই ইমোটিকন বানাতে লাগলেন নানা বিরামচিহ্ন ব্যবহার করে এবং খুব অল্প সময়েই ইমোটিকনের এক বিরাট সংগ্রহশালা তৈরি হয়ে গেল!
এর কিছু বছর পর অর্থাৎ ১৯৮৬ সালের দিকে বিরামচিহ্নের সাথে নানা ভাষার নানা বর্ণ যুক্ত হয়ে তৈরি হতে লাগলো এক একটি নতুন নতুন ইমোটিকন যাকে বলা হতো kaomoji
ইমোজির ইতিহাসে এর পর থেকেই বিপ্লব শুরু হয়। বিরামচিহ্ন বা বর্ন হতে বেড়িয়ে এসে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছবির মাধ্যমে মনোভাব প্রকাশের ধারণা আসতে লাগলো। কিন্তু অনলাইনে টেক্সটের জন্য জায়গা সীমিত থাকে,তাই যেকোন আকারের ছবি ইমোজি হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব নয়। এই চিন্তা থেকেই প্রথম ১২*১২ পিক্সেলের ইমোজি অনলাইন দুনিয়ায় প্রকাশ পায়। শুরুর দিকে মাত্র ১৭৮টি ইমোজি নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। এই ঘটনাগুলো ঘটে ১৯৯৯ সালে!
এর পর থেকে ধারাবাহিক বিবর্তনের মাধ্যমে ইমোজির সাথে যুক্ত হয়েছে নানা রকমের এনিমেশন! ইমোজির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় একাধিক প্রতিষ্ঠান এটি নিয়ে কাজ করতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে গড়ে উঠে ইমোজির শক্তিশালী লাইব্রেরী!

একেক ওয়েবসাইটের ইমোজি কেন একেক রকম?

প্রতিটি ইমোশনের ইমোজির জন্য এক-একটি নির্দিষ্ট ইউনিকোড বরাদ্দ থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইউনিকোড একই রেখে নানা প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিজস্ব ইমোজি ডেভেলাপ করে থাকে। তাই আপনি যখন ফেসবুকের ইমোজি কপি করে টুইটার ওয়েবসাইটে পেস্ট করছেন, তখন আপনি কিন্তু খালি ইউনিকোডই কপি-পেস্ট করলেন, টুইটারের নিজস্ব ইমোজি লাইব্রেরি ওই ইউনিকোডের জন্য নিজস্ব যে ইমোজি আছে সেটাই প্রদর্শন করবে! ফলে একেক ওয়েবসাইটে ইমোজির খুব সামান্য কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। একই কথা স্যামসাং বা অ্যাপল অথবা ফেসবুক- WhatsApp এর মতো অন্যান্য স্থানেও প্রযোজ্য।

Siam Shihab

Hello, I'm Siam Shihab. I write Content about all Trending News and Information. I'm working on this Website since June 2021. You can Visit my Profile page to read all of my content. Thank You so much to know about me.
Back to top button
Close